প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা ১৪২১ ও ১৪২২ সালে কৃষি খাতের উন্নয়নে অবদান রাখায় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হিসাবে ৫৫ ব্যক্তি এবং ৯টি সংগঠনকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকে ভূষিত করেছেন।
শেখ হাসিনা রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজয়ীদের মধ্যে এসব পদক প্রদান করেন।
কৃষি উন্নয়ন ও গবেষণায় প্রতি বছরে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে ১০টি ক্যাটাগরিতে ৫টি স্বর্ণ, ৯টি রৌপ্য ও ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হয়।
স্বর্ণ পদক বিজয়ীদের প্রত্যেকেই ১৮ ক্যারেটের ২৫ গ্রাম ওজনের ১টি স্বর্ণ পদক ও নগদ ১ লাখ টাকা, রৌপ্য পদক বিজয়ীদের প্রত্যেকেই ২৫ গ্রাম ওজনের ১টি রৌপ্য পদক এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ীদের প্রত্যেকেই ১টি ব্রোঞ্জ পদক ও নগদ ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন।
কৃষি গবেষণা এবং সম্প্রসারণ, প্রযুক্তি আবিষ্কার, বাণিজ্যিক খামার, বনায়ন, পশু পালন, পোল্ট্রি ও মৎস্য খামারে বিশেষ অবদানের জন্য এ পদক দেয়া হয়।
১৪২১ এর জন্য পদক প্রাপ্তরা হলেন- স্বর্ণ পদক বিজয়ী ১. কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি ঢাকা, ২. কুমিল্লা জেলার চৌদ্দ গ্রামের মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, ৩. পাবনার আটঘরিয়ার মো. আব্দুল খালেক, ৪. নীলফামারীর ডোমারের অন্যপূর্ণ এগ্রো সার্ভিস এবং পাবনার ঈশ্বরদীর মোছা. বেলী বেগম।
রৌপ্য পদক বিজয়ীরা হলেন- ১. রাজবাড়ী জেলার রাজবাড়ী সদরের উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. রকিব উদ্দিন, ২. নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জের গাউসুল আজম বাবা ভান্ডারী বহুমুখী খামার লিঃ, ৩. কুমিল্লা জেলার হোমনার মো. লাল মিয়া, ৪. ময়মনসিংহের ত্রিশালের মো. আজিম উদ্দিন, ৫. টাঙ্গাইল জেলার টাঙ্গাইল সদরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ওসমান গণি, ৬. রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীর বেগম আদুরী মার্দি, ৭. পাবনার জেলার ঈশ্বরদীর মো. আব্দুল বারী, ৮. কুমিল্লার জেলার চৌদ্দ গ্রামের মো. আবুল কাশেম, ৯. খাগড়াছড়ি জেলার খাগড়াছড়ি সদরের সুজন চাকমা।
ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ীরা হলেন- ১. রাজশাহী জেলার তানোরের নুর মোহাম্মদ. ২. সিলেট জেলার সিলেট মহানগরীর আবদুল হাই আজাদ বাবলা, ৩. খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার সুরেশ্বর মল্লিক, ৪. যশোর জেলার যশোর সদরের মো. আব্দুল ওয়াহিদ সরদার, ৫. কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি এম এ মতিন, ৬. মেহেরপুর জেলার মেহেরপুর সদরের মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস, ৭. নরসিংদী জেলার রায়পুরার রিয়াজুল ইসলাম সরকার, ৮. ময়মনসিং জেলার গফর গাঁওয়ের মো. রফিকুল ইসলাম, ৯. পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ার মো. আবুর বকর সিদ্দিক, ১০. ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের গোলাম মোস্তফা, ১১. পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর মাহফুজা খানম শীমা, ১২. খুলনা জেলার বটিয়াঘাটার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরদার আবদুল মান্নান, ১৩. গাইবান্ধা জেলার সাঘাটার মো. আমির হোসেন, ১৪. নওগাঁ জেলার নওগাঁ সদরের মো. সালাহ উদ্দিন উজ্জল, ১৫. জয়পুরহাট জেলার জয়পুরহাট সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম সাজু, ১৬. জামালপুর জেলার জামালপুর সদরের মো. ইজাদুর রহমান, ১৭. খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার অশোক বৈরাগী এবং ১৮. কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারার মো. শাহীনুর রহমান।
১৪২২ এর জন্য পদক প্রাপ্তরা হলেন- স্বর্ণ পদক বিজয়ী ১. গাজীপুরের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্ল্যান্ট ব্রিডিং ডিভিশন, ২. গাজীপুরের সলনার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩. সিলেট জেলার সিলেট মহানগরের মো. আবদুল বাছিত সেলিম, ৪. শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশিদ ভুইয়া, ৫. রংপুর জেলার রংপুর সদরের নাজমুন নাহার।
রৌপ্য পদক বিজয়ীরা হলেন- ১. ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম, ২. ঝিনাইদহ জেলার ঝিনাইদহ সদরের বেগম ফারজানা বিবি বিশ্বাস, ৩. নাটোর জেলার নাটোর সদরের আলহাজ মো. আলফাজুল আলম, ৪. যশোরের শেখ আফিল উদ্দিন এমপি, ৫. চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার জাকির এন্ড ব্রাদার্স, ৬. নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের মো. মাসুদুল হক চৌধুরী, ৭. চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, ৮. নবাবগঞ্জের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক হর্টি কালচার রিসার্চ সেন্টারের কৃষিবিদ ড. মো. সরাফ উদ্দিন এবং ৯. নরসিংদী জেলার শিবপুরের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক হর্টি কালচার রিসার্চ সেন্টারের ড. মো. নজরুল ইসলাম।
ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ী হলেন- ১. কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জুলফিকার আলী, ২. দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরের গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র, ৩. সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার মো. ইউনুস আলী, ৪. কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অফিসের স্টোর কিপার সৈয়দ নুরুল আউয়াল তারা মিয়া, ৫. কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোটের জালাল আহমেদ, ৬. ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জের মো. হেলাল উদ্দিন, ৭. ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জের কার্ড মহিলা সমিতি, ৮. সাতক্ষীরা জেলার সাতক্ষীরা সদরের বেগম শাহানা সুলতানা, ৯. সিলেট জেলার বিশ্বনাথের মোছা. রুবা খানম, ১০. গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের মো. দেলোয়ার হোসেন, ১১. পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর এস এম রবিউল ইসলাম, ১২. সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের বেগম ইলিজা খান, ১৩. রংপুর জেলার কেরানীপাড়ার কৃষি তথ্য সেবার আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসের মো. আবু সায়েম, ১৪. ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির, ১৫. ঢাকা নবাবগঞ্জের বেগম মায়া রানী বাউল, ১৬. বান্দরবান জেলার সদরের তারাঙ্গা, ১৭. চট্টগ্রাম জেলার পুটিয়ার মো. হারুন, ১৮. পাবনা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি উন্নয়নে জনগণ এবং প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করতে কৃষি পদক প্রদান চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর চালু করার পদক প্রদানকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার তহবিল আইন-২০০৯ প্রণয়ন করা হয়। এ কর্মকান্ডকে আরো গতিশীল করতে পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন-২০১৬ প্রণয়ন করা হয়। এ আইনের আলোকে প্রথমবারের মতো ১৪২১ ও ১৪২২ সালের জন্য ৫৫ জন ব্যক্তি ও ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ১০টি স্বর্ণ, ১১টি রৌপ্য ও ৩৬টি ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কৃষি সচিব মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ এ পদক বিতরণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।