কুমিল্লা মহানগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রিতম আলম অন্তু (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযােগ উঠেছে। অন্তু কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্যারিস আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক অপু আলমের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি সদর দক্ষিণ উপজেলার বাগমারা মনোহরপুর গ্রামে।
জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টায় সামান্য জ্বর ও বমি নিয়ে প্রিতমকে কুমিল্লা নগরীর রামঘাটস্থ মিডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শে প্রিতমের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা সকাল ১০টায় করা হলেও রিপোর্ট দেয়া হয় সন্ধ্যা ৬টায়। রিপোর্টে চিকিৎসক প্রিতমের শরীরে পটাশিয়ামের শূণ্যতা উল্লেখ করে দ্রুত তাকে ঢাকায় নেয়ার নির্দেশ দেন।
পরে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় রওনা করে প্রিতমকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সোয়া ১১টায় সেখানকার ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় প্রিতমের আত্মীয় স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন।
প্রিতমের বাবা অপু আলম জানান, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা নাজুক আমার ছেলে জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করে গেল। কার কাছে বিচার চাইবো? সময় মতো প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট পেলে হয়তো আমার ছেলেকে বাঁচানো যেত।
শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মো. মজিবুর রহমান জানান, সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ না করলেও খোঁজ খবর নিচ্ছি।
এদিকে ওই শিশুর মৃত্যুর খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এ মৃত্যুর জন্য দায়ী হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মকর্তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছন অনেকেই। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এদিকে প্রিতমের মরদেহ বাড়িতে আনার পর তার মা, বাবা ও বড় ভাই ফাহিম কান্নায় ভেঙে পড়েন। আজ দুপুরে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বাগমারা-মনোহরপুর গ্রামে নামাজে জানাজা শেষে প্রিতমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য অধ্যাপক অপু আলম প্যারিস থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক প্রবাস বাংলা পত্রিকার সম্পাদক এবং তার স্ত্রী নাজিয়া আলম ওই পত্রিকার প্রকাশক। গত ২২ জুন স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে ফ্রান্স থেকে দেশে আসেন অপু আলম।