কালো টাকা ও গ্রামীণ ব্যাংক বিষয়ে সংবাদ: অর্থমন্ত্রীর ব্যাখা

কালো টাকা ও গ্রামীণ ব্যাংক বিষয়ে সংবাদ: অর্থমন্ত্রীর ব্যাখা

‘বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ’ এবং ‘গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠন’ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ইআরএফ-এর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় যে বক্তব্য দিয়েছিলেন -সে বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে পৃথক দুটি প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সোমবার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা গণমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

‘প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ’ শিরোনামে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুধাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়, ‘আজ (সোমবার) বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে অর্থমন্ত্রীর বরাত দিয়ে সংবাদ বেরিয়েছে যে, বাজেটে আবারও কালো টাকা সাদা হচ্ছে। সংবাদটি সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।’

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘কালো টাকা আমি পছন্দ করি না। আমি এটা চাইও না। কিন্তু দেশের স্বার্থে বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ খাতের স্বার্থে সেই রকম উদ্যোগ নিতে হয়। তবে আগামী বাজেটে কালো টাকা সাদা হবে কি না তা এখনও বলা সম্ভব নয়।’

দেশ থেকে কালো টাকা বিদায় করা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন. ‘দেশ থেকে কালো টাকা উচ্ছেদ খুব সহজ কাজ নয় এবং তা সম্ভবও হবে না।’

এর আগে সকালে মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন যে, কালো টাকা প্রসঙ্গে তার বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে এবং তিনি এর আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ পাঠাবেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার ব্যাপারে যেভাবে সংবাদ ছাপা হয়েছে সেটা আমার জন্য খুবই দুঃখের কারণ। প্রায় সকলেই লিখেছেন যে, আমি কালো টাকা পছন্দ করি। কিন্তু আমি কালো টাকা কোনোদিনই চাই না। কিন্তু গণতন্ত্র হলো কম্প্রোমাইজের ব্যাপার। এছাড়া এখানে আরো অনেক ব্যাপার রয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলে কিছু নতুন ইনভেস্টমেন্ট আসবে, স্টক মার্কেটের অস্থিতিশীলতা কাটবে; তবে এ বছরে এ সুযোগ দেওয়া হবে কি না- তা এখনও অনিশ্চিত।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এরপর আপনারা প্রশ্ন করেছেন দেশ থেকে কালো টাকা কীভাবে বিদায় করবেন? আমি তখন বলেছি, এটি সহজ ব্যাপার নয়, দুনিয়ার সব কালচারে আছে, এমনকি মার্কিন মুল্লুকেও রয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ট্যাক্স যেখানে আছে, সেখানে ট্যাক্স ফাঁকিও আছে। বাংলাদেশে যেখানে বিদেশি সূত্রে টাকা-পয়সা পাওয়া যায়, ট্যাক্স লাগে না, সুতরাং সেখানেও একটা ঝামেলা রয়েছে। সেটা আমি টোটালি নির্মূল করে ফেলবো এরকম বোকা স্টেটমেন্ট আমি করতে পারি না। আপনারা টোটালি ভুল দিয়েছেন।’

প্রসঙ্গ: গ্রামীণ ব্যাংক
‘গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠন’ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ-এর যুগ্ম-সচিব গোকুল চাঁদ দাস স্বাক্ষরিত ‘প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা’ শিরোনামে প্রেরিত পত্রে বলা হয়, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের অনেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো মোটামুটিভাবে প্রফেসর ইউনুসের ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কী সম্পর্ক সেটা খুঁজে বের করার জন্য কমিশন গঠনের চিন্তা-ভাবনা আছে।’

গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক যেভাবে পরিচালিত হয় সেখানে মূল দায়িত্ব থাকে জোনাল অফিসের উপরে এবং সেভাবে সে দায়িত্ব প্রতিপালিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এবং হবেও না। গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা এ বিষয়ে এতদিনে পূর্ণ নিশ্চয়তা পেয়েছেন এবং তারা স্বাভাবিকভাবে তাদের কাজ করে যাচ্ছেন।’

অর্থ বাণিজ্য