ইউনাইটেড নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

ইউনাইটেড নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড কলেজ অব নার্সিংয়ের এক ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও সহপাঠীরা বলছেন, ওই ছাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছেন, আত্মহত্যা।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে হত্যার অভিযোগ তুলে বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। তবে এ সময় হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠানটির মালিকপক্ষের ভাড়াটে লোকজন তাদের উপর হামলা চালায় বলে দাবি করে শিক্ষার্থীরা।

গত ১১ জুলাই (মঙ্গলবার) রাতে ইন্টার্ন নার্স হিসেবে দায়িত্বপালনকালেই রাত সাড়ে ৩টার দিকে শারমিন সুলতানা সিকু (২৫) নামে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংরায়। তিনি ২০১১-১২ সেশনে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

সামিউল্লাহ নামে এক সহপাঠী জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তির সময় কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, তোমরা এখানে ফ্রি পড়বা। এখানে ইন্টার্নকালে আয়ের ২ হাজার টাকা হাসপাতালকে দিতে হবে। কিন্তু আমরা পাস করার পর আমাদের বলা হয়, ৮ লাখ টাকা দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখানে ইন্টার্ন করতে হলে আয়ের অর্ধেক টাকা প্রতিষ্ঠানকে দিতে হয়। আমরা মানিনি। ২৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে আমরা ২৫ জন বেড়িয়ে আসি। তবে জোর করে শারমিনকে যোগদান করানো হয়। ও সেখানে মারা গেল। ও আত্মহত্যা করেনি, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত শারমিন সুলতানা সিকুর অন্য এক সহপাঠী বলেন, বিষয়টি আমরা গুলশান পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। যে কারণে আজ আমরা হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির সামনে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করতে চাইলে আমাদের উপর হামলা করা হয়। আমাদের জোর করে উঠিয়ে দেয়া হয়। ছাত্রীদের হোস্টেলে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রীদের ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, সহপাঠী শারমিনকে হত্যার বিচারের দাবিতে ও আমাদের উপর হামলার প্রতিবাদে এখন আমরা প্রেসক্লাবে যাচ্ছি। সেখানেই মানববন্ধন করবে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ইউনাইটেড কলেজ অব নার্সিং এর প্রিন্সিপাল মমতাজ খানম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এক ছাত্রী ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্টার্ন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। গত ১১ তারিখ রাতে সে হঠাৎ মারা যায় বলে জানতে পেরেছি। আমি ক্লাসে আছি, এখন এ বিষয়ে কিছু বলতে চাইছি না।

হত্যার অভিযোগে মানববন্ধনের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও হোস্টেলে আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই।

ইউনাইটেড হাসপাতালের কাস্টমার রিলেশন অফিসার সেজান জাগো নিউজকে বলেন, শারমিন নামে এক ছাত্রী মারা গেছে। কী কারণে মারা গেছে তা জানতে হলে হাসপাতালের ইনফরমেশন ডেক্সে কথা বলতে হবে।

তবে হাসপাতালের এমডি’র সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার টেলিফোন নম্বার চাইলেও তা দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। পরে একই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং প্রমোশন অফিসার সাজ্জাতুর রহমান শুভর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে তা আপনার কাছেই জানলাম।

তিনি আরও বলেন, নার্সিংয়ে ভর্তির আগে বিভিন্ন শর্ত মেনে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হলেও এখন তারা তা মানছেন না। তারা এখান থেকে চলে যেতে চাইছে। তাই তারা হত্যার অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছে।

বাংলাদেশ