ঘুম কেড়ে নিল ১১ প্রবাসীর প্রাণ

ঘুম কেড়ে নিল ১১ প্রবাসীর প্রাণ

দেশে পরিবার-পরিজনকে সুখে-শান্তিতে রাখতে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব হয়েছিল তাদের গন্তব্য। প্রবাসী শ্রমিক তারা। কর্মব্যস্ত দিনের শেষে প্রতিদিনের মতো বুধবার রাতের খাবারের পর ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।

কিন্তু সেই ঘুম থেকেই যে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হবে তা হয়তো কখনোই কল্পনাও করতে পারেননি। ভোর রাতের গভীর ঘুমে যখন তারা ডুবে ছিলেন; ঠিক তখই আগুনের সূত্রপাত্র। ঘুমিয়ে থাকায় বুঝতে পারেননি আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিতে যাচ্ছে তাদের প্রাণ।

স্বল্প টাকায় ভাড়া নেয়া জানালাবিহীন বাসায় আগুনে পুড়ে প্রাণ গেছে ১১ জন বাংলাদেশি-ভারতীয় প্রবাসী শ্রমিকের। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নাজরান প্রদেশে। অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ছয়জন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দৈনিক সৌদি গ্যাজেট।

এতে বলা হয়েছে, বুধবার রাত ৪টার দিকে নাজরানের একটি পুরনো বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ১১ অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বাড়িটিতে বায়ু চলাচলের জন্য কোনো জানালা ছিল না।

নাজরান সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারি বলেন, আমরা রাত ৪টার দিকে টহলরত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। অগ্নিকাণ্ডে দমবন্ধ হয়ে ১১ বাংলাদেশি-ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিক মারা গেছেন।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় নিহত শ্রমিকরা গভীর ঘুমে ছিলেন। টহল পুলিশের খবরের পর সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনার পর নাজরান প্রদেশের আমির ও যুবরাজ জালায়ি বিন আব্দুল আজিজ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে নাজরান সিভিল ডিফেন্স, নাজরান পৌরসভা, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়েও একটি কমিটি গঠনের আদেশ দিয়েছেন।

নিহত শ্রমিকরা নাজরানের ফায়সালিয়াহ জেলার স্বর্ণ মার্কেটের কাছের একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। পুরনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক