প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ও বোন শেখ রেহানার পাঁচ ছেলেমেয়ে সম্পর্কে বলেছেন, তাদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। তাদের একটা কথা বলে দিয়েছি লেখাপড়া শিখেছ ওইটুকুই তোমাদের সম্পদ। এই সম্পদই তোমাদের দিতে পারি, এর বেশি নয়। আল্লাহর রহমতে তারাও প্রতিটি কাজে আমাদের সহায়তা করে, কখনও বিরক্ত করে না। এই ব্যবসা দিতে হবে, এটা করতে হবে, সেটা করতে হবে এ ধরনের বিরক্ত তারা কখনও করেনি।
বুধবার জাতীয় সংসদে ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যের একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তারা বরং আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ, অটিজমের জন্য কাজ, আমাদের দলের রিসার্চ সেন্টার তৈরি করাসহ দেশের অনেক উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করছে। এই সময় তিনি টিউলিপের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি গ্রামের পর গ্রাম হেঁটেছি। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কখনও দুর্ভিক্ষ হয়েছে, দুর্ভিক্ষপীড়িত এলাকায় গিয়েছি। কখনও ঝড় হয়েছে সেখানে রিলিফ দিতে গিয়েছি। পেয়েছি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা। কত মা-বোন ছুটে এসেছে, কাছে টেনে নিয়েছে, বুকে টেনে নিয়েছে। মাটির ঘরে বসিয়েছে। উঠোনের রাস্তায় ডাব কেটে দিয়ে বলেছে, মা এটা খাও। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শুধু বলেছে, বাবা জীবনটা দিয়ে গেছে তুমিও পথে নেমেছ মা? তুমি পথে নামছ আমাদের জন্য?
শেখ হাসিনা বলেন, এই যে ভালোবাসার পরশ, মা-বাবা হারানোর বেদনা তো সেখান থেকেই ভুলে গেছি। সেখান থেকেই শক্তি পেয়েছি। এই মানুষগুলোর জন্যই তো আমার বাবা জীবন দিয়েছেন। তাই এদের জন্য জীবনের যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নয়, আজকে ক্ষমতা আমার জন্য ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য নয়। আমি রাষ্ট্রপতির মেয়ে ছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে ছিলাম। আমি নিজে প্রধানমন্ত্রী ছিলাম দুইবার। এবারসহ তিনবার। কখনও নিজের ভাগ্যে কী করব সে কথা জীবনেও চিন্তা করিনি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়েছি আল্লাহর রহমতে তারাও আমাকে সাহায্য করে।
তিনি আরও বলেন, আজকে মানুষের জন্য যে কিছু করতে পারছি এটাই আনন্দ। ক্ষমতাটা হচ্ছে মানুষের সেবা করার সুযোগ। সে সুযোগটা যে পাচ্ছি এবং জনগণ যে ভোট দিয়ে আমাকে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছে এবং আমাদের পার্লামেন্টের পার্টি আমাকে তাদের নেতা বানিয়েছে, আমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশের সেবা করতে পারছি- এটাই তো সবচেয়ে বড় পাওয়া যে, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার সুযোগ পেয়েছি।