ভারতের আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে আগামী কয়েকদিনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটির জলসম্পদ মন্ত্রণালয় ওই এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া কয়েকটি নদীর অববাহিকায় নজিরবিহীন বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে। খবর বিবিসির।
জলসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে আসাম, অরুণাচল, সিকিম, ভুটান আর উত্তরবঙ্গের কয়েকটি অঞ্চলে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বর্ষার ফলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর ফলে আগামী ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র ও তার শাখা ও উপনদীগুলোর পানির স্তর দ্রুত বাড়ছে।
আসামের জোরহাট, দিব্রুগড় এবং শোনিতপুরে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় মাঝারি থেকে শুরু করে বড়সড় বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মোরিগাও, কামরূপ, গোয়ালপাড়া এবং ধুবড়ি জেলাগুলোতেও ব্যাপক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
রাঙানদী, জিয়া ভরালী নদীতে পানির স্তর এতটাই বেড়ে যেতে পারে যার ফলে উত্তর লখিমপুর শোনিতপুরে নজিরবিহীন বন্যা হতে পারে। এছাড়াও শিবসাগর, বরপেটা, কোকরাঝাড়, চিরাং এবং বঙ্গাইগাঁও জেলাগুলোতে একই সময়ে মাঝারি মাপের বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় আলিপুরদুয়ার জেলায় সঙ্কোশ নদীর পানির স্তর বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। তোর্ষা নদীর পানির স্তরও বাড়ছে।
সিকিম থেকে আসা অন্যান্য নদীর পানিও দ্রুত বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরেই আসামের বিভিন্ন নদী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি চলছে। ব্রহ্মপুত্র, সিয়াং, সুবনসিরি, ধানসিঁড়ি, বেকি, বরাক এবং কুশিয়ারা নদীগুলির পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় ওই রাজ্যের ২০টি জেলার প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন।
এমাসের শুরু থেকে বন্যায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আসাম বিপর্যয় মোকাবেলা দপ্তর। তাদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী ৭১টি ত্রাণ শিবিরে প্রায় ১৮ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৭৭ টি শিবির থেকে ত্রাণ বণ্টন চলছে।
বহু জায়গায় নদী বাঁধ, সড়ক এবং সেতু ভেঙ্গে গেছে। দূরবর্তী এলাকাগুলি থেকে নৌকায় করে গতকাল প্রায় দেড় হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। উত্তরপূর্ব ভারতের বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেই আবারও নতুন করে ভয়াবহ বন্যার সতর্কতা জারী করা হলো।