যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় প্রকাশ্যে নেমেছেন খালেদা: প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় প্রকাশ্যে নেমেছেন খালেদা: প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধারপরাধীদের বিচারকাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলের নেত্রী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে প্রকাশ্যে নেমে পড়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য তিনি এতোই উতলা , ঘোমটা খুলে নেমেছেন। এতোদিন রাখঢাক ছিল। কিন্তু এখন পুরোদমে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে তার অবস্থান স্পষ্ট করে মাঠে নেমেছেন। এখন আর রাখঢাক নেই। আর এজন্যই উনার আন্দোলন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রাতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত পাঁচ নারী আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি। মাত্র পাঁচটি আসনের জন্য ১৮০ জন আবেদন করেছেন। এটা দেখে মনে হচ্ছে, জাতীয় সংসদে আগামীতে সমানে সমান নারী-পুরুষ (৫০-৫০) সদস্য পাওয়া যাবে বলে আমি আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘নারীদের এই পাঁচ আসনের জন্য এতো সংখ্যক নারীর আগ্রহই প্রমাণ করে যে, আমরা নারী উন্নয়নে কাজ করছি। যার ফলে নারী জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।’

শেখ হাসিনা সবাইকে সংগঠনের জন্য কাজ করা ও সরকারে সফলতাগুলো মানুষের মধ্যে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যারা মনোনয়ন পেতে আগ্রহী, আবেদন করেছেন আপনারা প্রত্যেকেই যোগ্য ও দক্ষ। দলে আপনাদের অবদান রয়েছে। এদের ভেতর থেকে মনোনয়ন দেওয়া কঠিন কাজ। তবে যারা দলের রাজনীতিতে অবদান রেখেছেন ও বিভিন্ন দিক থেকে যোগ্য, বিশেষ করে, ওয়ান ইলেভেনের পর যারা মাঠে ছিলেন সার্বিক বিবেচনায় আমরা এ ধরনের পাঁচজনকে মনোনয়ন দেব।’

এরপর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রত্যেককে নৈশভোজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।

নৈশভোজ শেষে আবারো আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংসদীয় বোর্ডের সভায় উপস্থিত আছেন, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলির সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমÐলির সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, ওবায়দুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই সকলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক। কিন্তু আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রী তার সন্তানদের শিখিয়েছেন রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে লুটপাট করা। এফবিআই এসে তার ছেলেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। এটা জাতির জন্য লজ্জাকর।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা নিজ নিজ এলাকায় কাজ করে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করবেন। সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন। যাতে করে আগামীতে জনগণ বলে আমরা ভাই চাই না বোন চাই।

নারী উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের ব্যবস্থা করেছিলেন। চাকরি-শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি জন্য কোটার ব্যবস্থা করেছিলেন। আমরা বিচারপতি, সচিব, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সামরিক বাহিনীতে কমিশন র‌্যাংকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করি। তারা স্ব স্ব জায়গায় যোগ্যতার প্রমাণ রেখে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এর আগে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সমষ্ঠিগতভাবে সাক্ষাতকার নেওয়া হয়। এ সময়ে শেখ হাসিনা জানান, সংসদীয় বোর্ডের আরেকটি সভা ডেকে তারা ৫ জনের মনোনয়ন চুড়ান্ত করবেন। পরে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।

এদিকে সাক্ষাতকারের আগে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের উদ্দেশে করে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, এত সংখ্যক নারী প্রার্থী মনোনয়নের জন্য আবেদন করায় আমরা আনন্দিত। কিন্তু আসন মাত্র ৫টি। যদিও আপনারা প্রত্যেকেই যোগ্য। ১৭৯ জন প্রার্থী থেকে মাত্র ৫জনকে বাছাই করা হবে। এটা আমাদের জন্য অনেক কঠিন কাজ।

সবাইকে আমাদের খুশী করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলে এতো যোগ্য লোক আছে তাতে আমরা গর্বিত। আমরা সংরক্ষিত নারী আসন চাই না। ভবিষ্যতে সরাসরি আসনে অধিক নারী বিজয়ী হয়ে আসবে। সংসদে অর্ধেক নারী ও অর্ধেক পুরুষ থাকবে। এবার ১৭জন বিজয়ী হয়ে এসেছে। আগামীতে আরও আসবে এটাই আমাদের আকাঙ্খা।

তিনি আরও বলেন, এতো সংখ্যক প্রার্থীকে আলাদা করে ডেকে সাক্ষাতকার নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই সমষ্ঠিগতভাবে এই সাক্ষাতকার নিয়েছি।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর