বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৭টি অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিদিন ১৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে মূলত ৭৪ আসন বিশিষ্ট দুটি ড্যাস-৮ এয়ারক্রাপ্ট দিয়ে। মিশরের একটি এয়ারক্রাপ্ট লিজিং কোম্পানি থেকে ৫ বছরের চুক্তি ড্রাই লিজে এয়ারক্রাপ্ট দুটি ২০১৫ সালের শুরুতে আনা হয়। চুক্তির অর্ধেক সময় পার না হতেই উড়োজাহাজ দুটিতে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। ফলে যেকোনো সময় বিকল হতে পারে বিমানের ড্যাস দুটি।
মিশরের স্মার্ট এভিয়েশন নামে এয়ারক্রাপ্ট লিজিং কোম্পানি থেকে আনা দুটি ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ উড়োজাহাজ বিমান বহরে ২০১৫ সালে যুক্ত করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কম গতিসম্পন্ন পুরাতন এ ধরনের উড়োজাহাজ দিয়ে ওই বছর থেকে চালু করা হয় বিমানের বছর বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ রুটের বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। এদিকে চুক্তির অর্ধেক সময় পার না হতেই উড়োজাহাজ দুটিতে দেখা দেয় নানা সমস্যা। এবারের ঈদের চারদিন আগে স্পর্শকাতর সময়ে দুটি উড়োজাহাজ একসঙ্গে নষ্ট হলে অভ্যন্তরীন রুটগুলোতে চরম শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। উড়োজাহাজ দুটির পাইলটদের মতে, যেকোনো সময় আবারও বিকল হতে পারে জাহাজগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৎকালীন চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সময়ে পরিচালনা পর্ষদ এই এয়ারক্রাপ্ট দুটি আনেন। এয়ারক্রাপ্ট দুটি লিজের শর্ত অনুযায়ী, প্রয়োজনে ৩ বছর পর উড়োজাহাজগুলো ফেরত দেয়া যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের ড্যাস-৮ চালানো একজন পাইলট জাগো নিউজকে বলেন, বহরে থাকা লিজে আনা উড়োজাহাজ দুটির অবস্থা খুব ভালো না। অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা নির্বিঘ্ন করতে বিমান বহরে নিজস্ব এয়ারক্রাপ্ট দরকার। পুরাতন দুটি ড্যাস-৮ বিমানের গলার কাঁটা।
জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্সগুলো প্রোপেলার চালিত উড়োজাহাজ (টার্বোপ্রপ) ব্যবহার কমলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে এর কদর বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ রুটের পাশাপাশি কম দূরত্বের আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট পরিচালনার সুবিধার দোহাই দিয়ে পাখাযুক্ত এ ধরনের উড়োজাহাজ কেনার চিন্তা করছে বিমান বাংলাদেশ।
অবশ্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিমানের বহরে কানাডিয়ান সরকারের সহায়তায় যে তিনটি ড্যাস-৮ আনা হচ্ছে সেগুলো আধুনিক। এ ধরনের এয়ারক্রাপ্ট কম দূরত্বের রুটে উন্নত দেশেও চলছে। সবচে বড় কথা যে তিনটি ড্যাস-৮ আসছে তার সবগুলোই হবে বিমানের নিজস্ব এয়ারক্রাপ্ট।
এদিকে দেশের অভ্যন্তরে একই গন্তব্যে বিমানের সর্বোচ্চ তিনটি ফ্লাইট পরিচালনার ইতিহাস থাকলেও বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর কেউ কেউ একই গন্তব্যে প্রতিদিন ছয়টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
বিমানের উদ্যোগে আনা কানাডার বোম্বাডিয়ার কোম্পানির তৈরি ড্যাস-৮-কিউ-৪০০ এয়ারক্রাফ্ট উড়োজাহাজের বিষয়ে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীদের বর্ধিত চাহিদা পুরনের জন্যে তিনটি নতুন ড্যাস-৮-কিউ-৪০০ ক্রয় করা হচ্ছে । এ লক্ষ্যে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশনের সঙ্গে বিমানের কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, কানাডিয়ান এক্সপোর্ট ডেভলাপমেন্ট কর্পোরেশনের সঙ্গে ১২ বছরের সহজ কিস্তিতে এয়ারক্রাপ্ট তিনটির মূল্য পরিশোধ করবে বিমান। প্রথম উড়োজাহাজটি বিমানের বহরে যুক্ত হবে ২০১৮ সালের এপ্রিলে। বাকি দুটি ২০১৯ সালের মধ্যে বহরে যুক্ত হবে।