চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের প্রাপ্তি ফাখর জামান-হাসান আলি

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের প্রাপ্তি ফাখর জামান-হাসান আলি

বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আসে নতুনের বার্তা এবং পুরাতনকে বিদায় দেয়ার জন্য। বিশেষ করে বিশ্বকাপ। তবে, এর বাইরেও কোনো কোনো টুর্নামেন্ট তারকার জন্ম দিতে পারে। যার প্রমাণ এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। প্রায় এক দশক নিজ দেশে ক্রিকেট নির্বাসিত। তবুও ক্রিকেট প্রতিভা কতটা জন্ম দিতে পারে পাকিস্তান, সেটা আরও একবার দেখিয়ে দিলো তারা।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপা জয় করাই নয় শুধু বিশ্ব ক্রিকেটকে কয়েকজন প্রতিশ্রুতিশীল, উদীয়মান ক্রিকেটার উপহার দিয়েছে পাকিস্তান। যার মধ্যে অন্যতম ওপেনার ফাখর জামান এবং পেসার হাসান আলি।

নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের সেরা প্রাপ্তি এই দুই ক্রিকেটার। শুধু ফাখর জামান আর হাসান আলিই নয়, পাকিস্তানের প্রাপ্তির খাতায় রয়েছেন আরও দু’জন। যারা হয়তো ফাখর জামান আর হাসান আলির ছায়ায় ঢেকে গিয়েছেন। এ দু’জন হলেন স্পিনার শাদাব খান এবং অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ।

ফাখর জামানের বয়য়স কম নয়। ২৭। অথচ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেকটা হলো আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর দলের কৌশল পরিবর্তন করে ফেলে পাকিস্তান। ওপেনার আহমেদ শেহজাদকে দলের বাইরে ছুড়ে ফেলা হয়। নিয়ে আসা হয় নতুন মুখ ফাখর জামানকে। এছাড়া ওয়াহাব রিয়াজের পরিবর্তে দলে নেয়া হয় জুনায়েদ খানকে।

এই দুটি পরিবর্তনই যেন বদলে দিল পাকিস্তানকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেখা গেলো ভিন্ন চেহারায়। ফাখর জামান অভিষেক ম্যাচে করলেন ৩১ রান। কিন্তু জিতলো পাকিস্তান। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেলো পাকিস্তান। যে জয়ে ব্যাট হাতে অবদান রাখলেন ফাখর জামান। ৫০ রান করেন তিনি।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও হাসলো তার ব্যাট। রান করলেন ৫৭টি। অবশেষে জমানো সব পারফরম্যান্স উগড়ে দিলেন ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে। করলেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। তার গড়া ১১৪ রানের ইনিংসের ওপরই ৩৩৮ রানের ভিত গড়ে ওঠে পাকিস্তানের। জয়ও এলো ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে।

পাকিস্তানের আরেক প্রাপ্তি পেসার হাসান আলি। মোহাম্মদ আমিরের পর সম্ভবত আরেকজন প্রতিভাবান পেসার পেয়ে গেলো পাকিস্তান। অভিষেক হয়েছে গত বছরই ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ২১টি ওয়ানডে খেলেও ফেলেছেন ইতিমধ্যে। তবে নিজেকে চেনালেন এই টুর্নামেন্টে এসে। ভারতের বিপক্ষে ১টি, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩টি, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড এবং ফাইনালে ভারতের বিপক্ষেও নিলেন ৩টি করে উইকেট। মোট ১৩ উইকেট নিয়ে হলেন টুর্নামেন্টের সেরা বোলার।

প্রায় ১৯ বছর বয়সী তরুণ লেগ স্পিনার শাদাব খানেরও অভিষেক চলতি বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। হাতের ঘূর্ণিতে দারুণ কাজ রয়েছে। দারুণ সম্ভাবনাময়ী। ফাইনালে তুলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট। পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ এবং বিশ্ব ক্রিকেটে দারুণ লেগ স্পিনার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন তিনি।

ফাহিম আশরাফ একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছেন। তবে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে যেভাবে নিজেকে চিনিয়েছেন, ভবিষ্যতে পাকিস্তান দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

খেলাধূলা