এই প্রথমবারের মতো যৌথ নৌ মহড়া দিচ্ছে চীন ও রাশিয়া। রোববার পীত সাগরে চীনের পূর্ব উপকূল সংলগ্ন অঞ্চলে এ মহড়া শুরু হয়েছে। সমুদ্রসীমা নিয়ে চীনের সঙ্গে তার এশীয় প্রতিবেশীদের উত্তেজনা বাড়ার মুহূর্তে চীন এ যৌথ মহড়া শুরু করল।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, সকালে চীন ও রাশিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা শানডং প্রদেশের উপকূলবর্তী শহর কিংদাও শহরের কাছে যৌথ নৌ মহড়া উদ্বোধন করেন। মহড়াটি চলবে টানা পাঁচ দিন। চীনের ১৬টি জাহাজ এবং দু’টি সাবমেরিন এবং রাশিয়ার চারটি যুদ্ধজাহাজ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
এ মহড়ায় যৌথ আকাশ প্রতিরক্ষা, সাবমেরিন বিধ্বংসী অস্ত্র ও কৌশল এবং অনুসন্ধান ও উদ্ধার- এসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ছিনতাই হওয়া জাহাজ উদ্ধার এবং সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানেরও মহড়া দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিনহুয়া।
রাশিয়ার মতো সামরিক সক্ষমতা সম্পন্ন দেশের সঙ্গে চীন এমন সময় নৌ মহড়া শুরু করল যখন বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান সমরসজ্জা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে এবং পূর্ব চীন সাগরে দ্বীপগুলোর মালিকানা নিয়ে জাপানসহ প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের সঙ্গে চীনের বিরোধ চরমে উঠেছে।
এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে জনবসতিহীন কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে এশিয়ার একাধিক দেশের সঙ্গে চীনের বিরোধ রয়েছে। এসব দ্বীপ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসে ভরপুর বলে ধারণা করা হয়। উপরন্তু এগুলো জাহাজ চলাচলের পথ হিসেবে কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে এমন মহড়া অনুষ্ঠানের কারণে অনেকে সমালোচনা করলেও গত বৃহস্পতিবার চীন বলেছে, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ন রাখতেই এ মহড়া।
চীনের নৌ বাহিনীর উপদেষ্টা এবং বিশেষজ্ঞ ইন ঝাও বলেছেন, এ মহড়ায় যতোগুলো জাহাজ অংশ নিচ্ছে তা নজিরবিহীন। উভয়পক্ষ তাদের কৌশল এবং প্রযুক্তি বিনিময় করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিনহুয়ার দেওয়া তথ্য মোতাবেক, ২০০৫ সালে চীন ও রাশিয়া চারটি সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। সে সময় অবশ্য অন্যান্য দেশও এতে অংশ নেয়।
এর আগে দুই দেশ যুদ্ধের মহড়ায় অংশ নিয়েছিল ২০০৫ সালে, কিন্তু নৌ মহড়া এবারই প্রথম।