মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট- আইএস শীর্ষ নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি গতমাসের এক বিমান হামলায় নিহত হয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো শুক্রবার এই খবর প্রকাশ করেছে। মে মাসে সিরিয়ার রাকায় আইএস এর শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকের সময় সেখানে বিমান হামলা চালায় রুশ বাহিনী।
ওই বৈঠকে বাগদাদিও ছিলেন এবং বিমান হামলায় তিনিও নিহত হয়েছেন বলে ধারণা পাওয়ার পর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তা পরীক্ষা করে দেখছে বলে জানানো হয় রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
আল কায়েদার একটি দলছুট অংশকে নিয়ে ২০০২ সালের দিকে ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক (আইএসআই) গড়ে তোলেন বাগদাদি। তার নেতৃত্বেই অল্প কিছুদিনের মধ্যে ক্ষমতাশালী সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয় আইএসআই।
২০১৪ সালের ২৯ জুন সিরিয়ার আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা এবং ইরাকের মধ্যাঞ্চলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন বাগদাদি, যার খলিফা তিনি নিজে। সিরিয়ার রাকা শহরকে ঘোষণা করা হয় সেই খিলাফতের রাজধানী।
এর মধ্য দিয়ে গঠিত হয় ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ত বা আইএসআইএল, যা সংক্ষেপে আইএস নামে পরিচিতি পায়। অবশ্য নিজেদের তারা বলে দায়েশ।
সিরিয়া ও ইরাকে এই জঙ্গি দলটির হাতে নিহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, মিশর, জর্ডান ও তুরস্কের বহু নাগরিককে জিম্মি করার পর তাদের শিরোশ্ছেদ করে ইন্টারনেটে ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে এই সন্ত্রাসীরা।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইরাকি নাগরিক বাগদাদির প্রকৃত নাম ইব্রাহিম আল-সামারাই। তাকে ধরিয়ে দিতে গতবছর আড়াই কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
গত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী এবং রুশ বাহিনীর একের পর এক অভিযানে আইএসের শাক্তি অনেকটাই কমে আসায় তিনি রাকাতেই অবস্থান করছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
অবশ্য এর আগেও বেশ কয়েকবার বিমান হামলায় বাগদাদির আহত হওয়ার খবর এসেছে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে। একজন ‘গুপ্তঘাতকের বিষ মেশানো খাবার’ খেয়ে ইসলামিক স্টেটের প্রধান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও গতবছর খবর প্রকাশিত হয়। এমনকি কয়েকবার তার মৃত্যুর খবরও আসে। তবে প্রতিবারই তিনি জীবিত অবস্থায় আত্মপ্রকাশ করেছেন এবং ভিডিও বা অডিও বার্তায় নতুন করে হুমকি দিয়েছেন।