এশিয়া কাপের পর থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছুটি চলছে জাতীয় ক্রিকেট দলের। সহসা ছুটি শেষ হওয়ার মতো কোন উপলক্ষ্যও নেই। পাকিস্তান সফর বাতিল হওয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে তাদের এফটিপিও শূন্য। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগের।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চেষ্টা করছে বিকল্প সিরিজ আয়োজনের। মৌখিকভাবে অনেক প্রতিশ্রুতিও পেয়েছে। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের পাশাপাশি বিসিবি সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামালও এই কার্যোদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছেন। একদিন আগে বিসিবি সভাপতির নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডকে চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে খেলার আহ্বান জানিয়ে। প্রতিউত্তর এখনো আসেনি।
এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া সত্যিই কঠিন। মে-জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকায় শীত মৌসুম। হাড় কাঁপানো হিমেল হাওয়া খোদ দক্ষিণ আফ্রিকানরাও ওই সময়ে ক্রিকেট খেলতে চায় না। অতএব বিসিবির চিঠিতে আহলাদিত হয়ে বাংলাদেশ দলকে তারা অতিথি নাও করতে পারে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাক ফল রোববার ক্রিকইনফোকে বলেছেন, সপ্তাহ খানেক আগে সিএসএ সভাপতি উইলি ব্যাসনকে খেলার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সম্পূর্ণ তাদের খরচে বাংলাদেশে বা আমাদের এখানে খেলার জন্য। আমরা ক্রিকেট খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। কিন্তু সর্বপ্রথম দেখতে হবে খেলোয়াড়রা কতটা ম্যাচ খেলছে এবং কতটুকু বিশ্রাম পাচ্ছে।`
দক্ষিণ আফ্রিকার ভেন্যু একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। তাদের সিইও ফল বলেন, ডারবান ছাড়া অন্যত্র খেলা সম্ভব নয়। জোহানেসবার্গ, প্রিটোরিয়াতে প্রচন্ড শীত থাকে। কেপটাউনে বৃষ্টি ও শীতের প্রকোপের জন্য খেলা সম্ভব নয়।
তবে কাকুতি মিনতি করে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলকে ঢাকায় অতিথি করে আনতে পারলে বাংলাদেরই উপকার হবে। সেক্ষেত্রে জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ করা সম্ভব হলেও হতে পারে। কিন্তু মধ্য মে‘তে বাংলাদেশের আবহাওয়াও ক্রিকেট খেলার উপযোগী থাকে না। ওই সময়ে প্রচন্ডগরম পড়ে, ঝড়-বৃষ্টির উপদ্রুবও লেগে থাকে। গত বছর একই সময়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হওয়ার কথা ছিলো ঢাকায়। কিন্তু আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে সিরিজ বাতিল করা হয়।
বিসিবির ভারপ্রাপ্ত সিইও মনে করেন গরম থাকলেও রিজার্ভ ডে রেখে ওয়ানডে টুর্নামেন্ট কারা সম্ভব। রোববার তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। সিরিজটা হলে ভালো হয়। প্রয়োজনে রিজার্ভ ডে রেখে খেলা হবে। বৈদ্যুতিক আলোতেও খেলা হতে পারে।’
শেষপর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা না এলে ভরসা আয়ারল্যান্ড। তাদের ওখানে গিয়েই খেলতে হবে বাংলাদেশ দলকে। দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড পর্যায়ে কথাবার্তা ভালোই এগিয়েছে। জুলাইয়ে বাংলাদেশকে একটি চারদিনের, পাঁচটি ওয়ানডে খেলার সুযোগ করে দিতে রাজি আছে তারা। দু‘টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে পাঁচ ম্যাচের পরিবর্তে তিন ওয়ানডে হতে পারে। এই সফরটি হলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সব সুবিধাই পাবে বাংলাদেশ। অবশ্য তা নির্ভর করছে আইসিসি থেকে আইরিশদের আর্থিক অনুদান পাওয়ার ওপর। আর্থিক অনুদান চেয়ে আইসিসিতে আবেদন করেছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। সূত্র জানিয়েছে তাদেরকে অনুদান দিতে পারে আইসিসি। তাহলে ল্যাটা চুকে যায়। বড় দলের বিপক্ষে না হলেও খেলার মধ্যে থাকতে পারবে বাংলাদেশ।