মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় ১২৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সমস্ত পাকিস্তান এখন শোকাহত। শুক্রবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের অদূরে অভ্যন্তরীন রুটে চলাচলকারী একটি বোয়িং ৭৩৭ বিমান বিধ্বস্ত হয়। স্থানীয় ভোজা এয়ারলাইন্সের বিএইচও-২১৩ ফ্লাইটটি ১২১ যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু নিয়ে বন্দর নগরী করাচি থেকে রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে রওয়ানা হয়েছিলো।
উদ্ধারকর্মীরা রাতভর দুর্ঘটনাস্থল হোসেইন আব্দ গ্রামে তল্লাশি চালায়। কোন যাত্রীকে জীবিত খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তারা। তবে ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে বিধ্বস্ত বিমানের ব্লাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা এখন ব্লাক বক্সটিকে পরীক্ষা করে দেখছেন।
বিমানটি চূড়ান্ত ভাবে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ইসলামাবাদের আবহাওয়া ঝঞ্জা বিক্ষুদ্ধ ছিলো বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
উদ্ধার তৎপরতার সমন্বয়ক ব্রিগেডিয়ার সরফরাজ আলি জানান এখন পর্যন্ত ১১০ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।এগুলোর বেশিরভাগই তাৎক্ষনিক ভাবে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মৃতদেহগুলোর বেশির ভাগই বিকৃত হয়ে হয়ে গেছে।
বিমানের আরোহীদের শোকার্ত ও উদ্বিগ্ন আত্মীয়স্বজন এখন ভীড় করছে করাচি ও ইসলামাবাদের বিমানবন্দরে। শোকার্তদের আহাজারিতে ইসলামাবাদের বিমান বন্দরে সৃষ্টি হয় আবেগঘণ পরিবেশ। এক শোকার্ত পিতা বিলাপ করতে করতে বার বার আহাজারি করছিলেন তার কন্যাদের জন্য। তার দুই কন্যা বিধ্বস্ত বিমানটির যাত্রী ছিলেন।
বিধ্বস্ত বিমানটির ধ্বংসাবশেষ কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও এর বেশির ভাগ অংশই পড়ে ছোট্ট গ্রাম হুসেইন আব্দে। তবে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গ্রামবাসীদের কেউ নিহত হয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
যাত্রীদের ছিন্ন ভিন্ন মৃতদেহসহ বিমানের ধ্বংসাবশেষ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টুকরো হয়ে গ্রামের ফসলের খেত, বাড়ির আঙ্গিনা এবং গলিপথগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো।
উদ্ধারকর্মীরা এখন ছিন্ন ভিন্ন দেহাবশেষগুলোকে লাশবাহী ব্যাগে ভরে নিকটস্থ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছে। লাশগুলো সনাক্তের পূর্ব পর্যন্ত হাসাপাতালে সংরক্ষণ করা হবে।
এদিকে হতবিহ্বল গ্রামবাসী যেনো এখনও ঘটনার আকস্মিকতা আর ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারছেনা। ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি এবং অন্ধকারের মধ্যে তারা হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনতে পান বলে জানান স্থানীয় অধিবাসীরা।
বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি করাচি ত্যাগ করে স্থানীয় সময় বিকাল ৫ টায়। বিমানটির ইসলামাবাদ পৌঁছার সময় নির্ধারিত ছিলো সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়।