যে কারণে সংকটে কাতার

যে কারণে সংকটে কাতার

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে কাতারকে অবশ্যই ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক শক্তি মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে হবে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের এক বিবৃতিতে বলেছেন, তার দেশের সঙ্গে কাতারের চলমান সংকট নিরসনের জন্য দোহাকে অবশ্যই এই সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।

খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ দেশটি হামাস এবং মুসলিম ব্রাদারহুড ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের শিয়া মতাবলম্বী শক্তি ইরানের সমর্থক।

এর আগে সোমবার উপসাগরীয় অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরব, বাহরাইন, মিসর, আরব আমিরাতসহ সাতটি দেশ।

সর্বশেষ গত মে মাসে কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানি এক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে তিনি ইরানকে সহায়তার প্রস্তাবও দিয়েছেন। পাশাপাশি হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি সফরকালেই এমন ঘোষণা দিয়েছেন কাতারের আমির।

প্যারিসে সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতিতে সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেছেন, কয়েক বছর আগে কাতার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা বন্ধ করা এবং এর গণমাধ্যমের অন্য দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে সরে আসার বিষয়ে দেশটি যে অঙ্গীকার করেছিল আমরা তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আমরা কেউই কাতারকে আঘাত করতে চাই না। আমরা অনেক কষ্ট থেকেই কাতারের বিরুদ্ধে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা চাই তারা বুঝতে পারুক যে এটা স্থায়ী না এবং এটার পরিবর্তন হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, হামাস এবং মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন করে কাতার ফিলিস্তিন এবং মিসর সরকারের ক্ষতি করছে। আমরা এটাকে ভালো কাজ বলে মনে করি না। মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে কাতারকে অবশ্যই এ ধরনের নীতি থেকে সরে আসতে হবে।

তবে এ মুহূর্তে কাতারকে কি করতে হবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি জুবায়ের। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে কাতারের স্থল, সাগর এবং আকাশসীমা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজেদের ভুলের জন্যই কাতারকে মূল্য দিতে হচ্ছে।

জুবায়ের বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে নিজেদের বুদ্ধি এবং যুক্তি দিয়ে কাতার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। কাতারের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা অনেক কঠোর এবং এর ফলে কাতারকে যথেষ্ট মূল্য দিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যে, স্থায়ীভাবে এভাবে মূল্য দিতে হবে এটা কাতারের লোকজন চাইবে না।

এদিকে, কাতারের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর এমন সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছে কুয়েত। সোমবার রাতে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি ও কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহর মধ্যে টেলিফোনে এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন।

এছাড়া মঙ্গলবার কুয়েতের আমির শেইখ সাবাহ আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহ সৌদি আরবে সফর করেছেন। কাতারের সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে আলোচনা করেছন তিনি। তবে তাদের মধ্যে কি কথা হয়েছে সে বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি।

আন্তর্জাতিক