উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) ছয় রাষ্ট্রের সঙ্গে কাতারের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। সৌদি সরকার বলছে, সম্পর্ক ছিন্ন করার অংশ হিসেবে সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন, আরব আমিরাত, লিবিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের কাতারে যাওয়া, সেখানে বসবাস করা বা কাতার হয়ে অন্য কোন দেশে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
এসব দেশের নাগরিকদের ১৪ দিনের মধ্যে কাতার ছাড়তে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সৌদি আরব, আরব আমিরাত এবং বাহরাইনে বসবাসরত কাতারিদেরও একই সময়ের মধ্যে এসব দেশ ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
তবে মিসরও যদি একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাহলে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতারে এক লাখ আশি হাজার মিসরীয় নাগরিক বাস করছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ নির্মাণ শিল্পের পাশাপাশি প্রকৌশলী, চিকিৎসক এবং আইন পেশায় কর্মরত।
এই বিশাল কর্মী কাতার ছেড়ে চলে গেলে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো কঠিন সমস্যার মধ্যে পড়বে। মাত্র ২৭ লাখ মানুষের বসবাস আরব উপদ্বীপের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই ছোট রাষ্ট্রে।
দেশের জাতীয় বিমান পরিবহন সংস্থা কাতার এয়ারওয়েজ এবং কাতারের আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার কারণেই মূলত কাতারকে মানুষ বেশি চেনে।
এছাড়া ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার অর্জন এবং বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল দলগুলোর মধ্যে অন্যতম বার্সেলোনাকে স্পন্সর করে কাতার বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
রাজধানী দোহার ব্যাপক আধুনিক উন্নয়নের মাধ্যমে অনেক বহুজাতিক কোম্পানিকে সেখানে অফিস খুলতে আকৃষ্ট করেছে দেশটি। ফলে ছয়টি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় যে সংকট তৈরি হয়েছে তা অনেক কিছুকেই প্রভাবিত করতে পারে।
এছাড়া কাতারে এই মুহূর্তে কয়েকটি বড় নির্মাণ প্রকল্প চলছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি নতুন বন্দর, মেডিকেল এলাকা, মেট্রো প্রকল্প এবং ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য আটটি স্টেডিয়াম।
নির্মাণ শিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন, কনক্রিট এবং ইস্পাত জাহাজে আসলেও, স্থলপথ দিয়ে সৌদি আরব হয়েও আসে।
সীমান্ত বন্ধ হলে খাদ্যদ্রব্যের মত নির্মাণ উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাবে এবং কাজ সময়মত শেষ করা কঠিন হয়ে যাবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য আকাশপথ এবং স্থলপথ বন্ধ হলে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির সময়সীমাও হুমকির মুখে পরতে পারে।