আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন (দ্রুত বিচার) (সংশোধনী) আইন-২০১৭ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন

আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন (দ্রুত বিচার) (সংশোধনী) আইন-২০১৭ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন

আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন সৃষ্টির মতো অপরাধ করার দায়ে দুই বছরের কারাদন্ডের বিধান রেখে” আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন (দ্রুত বিচার) (সংশোধনী) আইন-২০১৭ এর খসড়া মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন সৃষ্টিকারী (দ্রুত বিচার) আইন ২০০২-এর ধারা ৪(১) একটি সংশোধনী আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান আইন সংশোধনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, চাদাঁবাজি, যাবাহন চলাচলে বাধাদান, সন্ত্রাস, টেন্ডার জালিয়াতি, হুমকি প্রদান, ছিনতাই, জনগণকে ভয়ভীতি দেখানো এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা বর্তমান আইনের সংশোধনীর আওতায় নিয়ে আসা। আইনের খসড়া অনুযায়ি আইন শৃঙ্খলা বিঘ্ন সৃষ্টিকারীর জন্য দায়ী ব্যাক্তির জন্য জরিমানাসহ সর্বনিম্ন ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৭ বছর পযর্ন্ত সশ্রম করাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বর্তমান আইনে দুই থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।
মন্ত্রিসভা পারমাণবিক সামগ্রী এবং পারমাণবিক সুবিধাদি সুরক্ষা সংক্রান্ত কনভেনশন অনুমোদনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, ১৯৭৯ আর্ন্তজাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা প্রথম প্রকৃত কনভেনশনটি গ্রহণ করে। প্রায় ১০৭ টি দেশ এতে স্বাক্ষর করে এবং আইএইএ কনভেনশনের সাম্পতিক সংশোধনী অনুমোদন করে। আইএইএ’র এই সংশোধনীতে বাংলাদেশেরও স্বাক্ষর করা উচিৎ। আইএইএ’র সংশোধনীটি পারমাণবিক সামগ্রীর অভ্যন্তরীণ ব্যবহার, গুদামজাত এবং পরিবহন নিশ্চিত করবে।
মন্ত্রিসভা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পারমাণবিক জ্বালানির বর্জ্য রাশিয়ায় ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সহযোগিতা প্রশ্নে রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তির খসড়াও অনুমোদন করেছে।

মো. সাইফুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফর ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠককালে পারমাণবিক বর্জ্য অপসারণ ইস্যু নিয়ে পুনরায় প্রাথমিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। রাশিয়ান ফেডারেশন তখন পারমাণবিক বর্জ্য বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে সম্মত হয় উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পরবর্তীতে এ ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ পারমাণবিক বর্জ্যরে ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে যে কোন সময় দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে এবং তা সম্পূর্ণ নিরাপদ ব্যবস্থার মাধ্যমেই পারমাণবিক বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করবে।
মন্ত্রিপরিষদের এই বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে ‘জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা দিবস’ হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়।
শফিউল আলম বলেন, দিবসটি বিশিষ্ট অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রয়াত স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনের স্মরণে সরকারিভাবে পালিত হবে, যিনি ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তিনি বলেন, এই দিবসটি দীর্ঘদিন যাবৎ অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বেসরকারিভাবে পালন করে আসছেন , যা পরে দেশব্যাপী ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামে প্রচারাভিযান চলছে। এর অবদানের ফলে দিবসটিকে সরকারিভাবে পালনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠকের শুরুতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ‘দ্য গ্লোবাল মোবাইলগভ অ্যাওয়ার্ড ২০১৭’ তুলে দেন।
গতমাসে যুক্তরাজ্যের ব্রাইটনে অনুষ্ঠিত মোবাইলগভ ওয়ার্ল্ড সামিট ২০১৭-তে এম৪এলআইএফই.ওআরজি-তে বিশ্বায়নে অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন এই পুরস্কার লাভ করে।
বিশ্বব্যাপী মোবাইল-ফোন ভিত্তিক প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি যথাযথ প্রযুক্তি জ্ঞান বিনিময়ে ভূমিকা রাখায় এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ