বৃষ্টি বাঁচিয়ে দিল বাংলাদেশের স্বপ্ন। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পরস্পর মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়া। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে ছিল টিম বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১৮৩ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল মাশরাফিরা।
১৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান সংগ্রহ করে ফেলেছিল স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নাররা। বাকি ১০০ রান তোলা তাদের জন্য কোনো ব্যাপারই ছিল না; কিন্তু দুর্ভাগা বৃষ্টি এসে সব তছনছ করে দিল। অস্ট্রেলিয়ার সহজ জয়ের স্বপ্ন নিমিষেই ভাসিয়ে দিল। নিশ্চিত জয়কে হাতছাড়া করে দিল বৃষ্টি।
ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি। অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিতে জমা পড়লো ২ পয়েন্ট। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অসিদের প্রথম ম্যাচটিও ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। ওই ম্যাচে অবশ্য অস্ট্রেলিয়াই ছিল হারের মুখে। নিশ্চিত পরাজয়ের ম্যাচে তারা ১ পয়েন্ট অর্জন করে। এবার নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ থেকে পেলো ১ পয়েন্ট। প্রকৃতি কত সুন্দর করেই না ভারসাম্য তৈরি করে দিলো!
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভাগাভাগি করে ১ পয়েন্ট অর্জন করার পর বাংলাদেশের স্বপ্ন টিকে থাকলো সেমিতে খেলার। পরপর দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ‘এ’ গ্রুপের হিসাব-নিকাশ জটিল করে দিল। সম্ভাবনা বাড়াল বাংলাদেশের।
কিভাবে? খুব সহজ হিসাব, সেমিতে যেতে হলে শেষ ম্যাচে অবশ্যই নিউজিল্যান্ডকে হারাতে মাশরাফিদের। আর নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারতে হবে ইংল্যান্ডের কাছে। তাহলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের কারণে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ২। দুই ম্যাচে ভাগাভাগির কারণে অস্ট্রেলিয়ারও পয়েন্ট ২। নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশের পয়েন্ট ১ করে।
আজ ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচে অবশ্যই ইংল্যান্ডকে জিততে হবে। আবার শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারতে হবে বাংলাদেশের কাছে। তাকে তাদের পয়েন্ট থেকে যাবে ১। যদি নিউজিল্যান্ড ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়, তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৩। সে ক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতে রান রেট বাড়াতে হবে বাংলাদেশের।
আবার অস্ট্রেলিয়ার বাকি আছে আর একটি মাত্র ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ওই ম্যাচটিতে যদি অস্ট্রেলিয়া জিতে যায়, তাহলে তারাই উঠে যাবে সেমিতে। বাংলাদেশের সম্ভাবনা যাবে কমে। সে ক্ষেত্রে তাহলে ইংল্যান্ডকে বাকি দুই ম্যাচেই হারতে হবে। তাতে ইংলিশদের পয়েন্ট হবে ২। বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে পয়েন্ট হবে ৩। রানরেটে এগিয়ে থাকতে পারলে কিউইদের পেছনে ফেলে সেমিফাইনাল খেলতে পারবে বাংলাদেশই।
বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলতে হলে সব ক্ষেত্রেই নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে দিতে হবে। হয় সব ম্যাচে হারিয়ে, নয়তো রান রেটে পেছনে ফেলে। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ ম্যাচ হারতে হবে কিংবা ইংল্যান্ডকে বাকি দুই ম্যাচেই হারতে হবে। তবেই খুলবে বাংলাদেশের সামনে সেমিফাইনালের রাস্তা।
তার জন্য একমাত্র শর্ত, শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে। পারবে কী মাশরাফিরা?
কী কী হলে বাংলাদেশ যাবে সেমিতে
- ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারতে হবে, শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে হবে বাংলাদেশকে এবং ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে জিততে হবে ইংল্যান্ড। তাতে পয়েন্ট দাঁড়াবে, ইংল্যান্ড-৬, বাংলাদেশ -৩, অস্ট্রেলিয়া- ২ এবং নিউজিল্যান্ড -১।
- নিউজিল্যান্ডের কাছে যদি ইংল্যান্ড হেরে যায়, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার কাছেও ইংল্যান্ডকে হারতে হবে। অর্থ্যাৎ ইংল্যান্ডকে দুই ম্যাচেই হারতে হবে। আর শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে বাংলাদেশকে। তখন পয়েন্ট দাঁড়াবে, অস্ট্রেলিয়া -৪, বাংলাদেশ -৩, নিউজিল্যান্ড-৩, ইংল্যান্ড -২। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের যে রান রেটে এগিয়ে থাকবে, তারাই যাবে সেমিতে।
- এর বাইরে বাংলাদেশ যদি শেষ ম্যাচ হেরে যায়, তাহলে তো কথাই নেই- বিদায় নেবে বাংলাদেশ। আবার ইংল্যান্ড যদি আজ জিতে যায় এবং শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায়, তাহলে অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডই উঠে যাবে সেমিতে। বিদায় নেবে বাংলাদেশ আর নিউজিল্যান্ড। আর যদি নিউজিল্যান্ড বাকি দুই ম্যাচ জিতে যায়, তখন ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে বিজয়ী দলই পাবে সেমির টিকিট।