মিলছে না টিসিবির চিনি-তেল, পড়ে থাকছে ডাল

মিলছে না টিসিবির চিনি-তেল, পড়ে থাকছে ডাল

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ন্যায্যমূল্যের পণ্য গত ১৫ মে থেকে ঝালকাঠি জেলা শহরে ৪ জন ডিলার বিক্রি শুরু করেছেন। টিসিবির চিনি ৫৫ টাকা, সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা ও মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে মূল্য নির্ধারণ করে। ক্রেতারা বাজার দর থেকে ২০ টাকার ব্যবধান বেশি দেখে চিনি, তেল ও ছোলা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ডাল নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ডিলাররা।

ঝালকাঠিতে মেসার্স সুমন স্টোর, মনোজ স্টোর, রুবেল এন্টারপ্রাইজ ও আনোয়ার ব্রাদার্স ডিলার হিসেবে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মসুর ডালের মূল্য রয়েছে মান অনুযায়ী প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত কিন্তু টিসিবির ডালের মূল্য প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এছাড়া বাজারে প্রতিকেজি হিসেবে চিনি ৭২ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০ টাকা, ছোলা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঝালকাঠির ৪টি স্থানে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। কম দামে পণ্য পেতে ক্রেতারা বেশ ভিড় করছেন।

তবে চাহিদার তুলনায় তেল সরবরাহ কম বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতা ও ডিলাররা। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন বিক্রির জন্য ১ জন ডিলারকে ৩০০ কেজি চিনি, ২৫০ কেজি মসুর ডাল, ২৫০ লিটার সয়াবিন তেল ও ৬০০ কেজি ছোলা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ডিলাররা প্রথমে প্রতিদিন ৪০০ কেজি করে চিনি, ৪০০ কেজি করে ছোলা ও ২৫০ কেজি করে মসুর ডাল এবং ৪০০ লিটার তেল পেয়েছিলেন। পরে প্রতিদিন ছোলা ২০০ কেজি করে বাড়ানো হয়েছে। কমানো হয়েছে ২০০ লিটার তেল ও ১০০ কেজি চিনি।

প্রতি কেজি চিনি ৫৫, মসুর ডাল ৮০, ছোলা ৭০ ও সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮৫ টাকা দরে বিক্রির কথা। একেকজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ৩ কেজি মসুর ডাল, ৫ কেজি ছোলা ও ৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের পেছনে অনেক মানুষ সারি বেধে দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন রিকশাচালক আজিজুল। তিনি ১ কেজি ছোলা ও ২ কেজি চিনি কিনেছেন। সয়াবিন তেল কিনতে চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি।

আজিজুল বলেন, সয়াবিন তেল আগেই নাকি বিক্রি হয়ে গেছে। ট্রাকে পণ্য আরও বেশি রাখা দরকার। তাহলে ক্রেতাদের খালি হাতে ফিরে যেতে হবে না। চাহিদামতো পণ্য না পেয়ে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, টিসিবির তেল কিনতে পারলে তার কিছু টাকা সাশ্রয় হত। কিন্তু তেলের সরবরাহ কম থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না।

ডিলার সুমন স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মো. সুমন হাওলাদার জানান, টিসিবির ডালের চেয়ে বাজারের ডালের দাম প্রায় ১০ টাকা কম। ক্রেতারা ডাল নিচ্ছেন না। আমার কাছে ২৫ মণের বেশি ডাল অবিক্রীত রয়ে গেছে। অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে গেছে। এদিকে তেল কমিয়ে দেওয়ায় ক্রেতারা অখুশি।

ডিলার রুবেল স্টোরের সত্ত্বাধীকারী ও সাবেক পৌর কমিশনার মো. জালাল আহমেদ জানান, ডালের চাহিদা কম। কারণ বাজারের ডালের দাম টিসিবির চেয়ে কম। প্রতিদিন প্রচুর ডাল থেকে যাচ্ছে। আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ডাল কমিয়ে তেল একটু বাড়িয়ে দিলে ক্রেতারা উপকৃত হতেন। ডাল না তুললে আবার আমাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

অপরদিকে টিসিবির পণ্য দোকানে বাজার দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মনোজ স্টোরের বিরুদ্ধে। প্রতিবেদক শনিবার দুপুরে মনোজ স্টোরে টিসিবি পণ্যের ছোলা কিনতে গেলে ১ কেজিতে ৮০ টাকা রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনোজ সমদ্দার বলেন, টিসিবি ছাড়াও আমাদের দোকানের পণ্য রয়েছে। ছোলার গাঁয়ে টিসিবি লেখা নেই।

জেলা সংবাদ