বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির শুরু হয়েছে গোটা দেশে। এই তলোপাড়ে কিছুটা আঁচ পড়েছে শোবিজ অঙ্গনের মডেল-অভিনেত্রীর মধ্যেও।
কারণ, ওই ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামি আবদুল হালিম ওরফে নাঈম আশরাফের সঙ্গে অনেক জনপ্রিয় তারকার সেলফি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।
এই তালিকায় রয়েছেন লাক্সতারকা মৌসুমি হামিদও। নাঈম আশরাফের সঙ্গে একটি সেলফি তুলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন এই অভিনেত্রী। তবে মৌসুমি এটাকে প্রথমে পাত্তা না দিতে চাননি। কিন্তু দিন দিন ফেসবুকে সেলফিটি নিয়ে নাঈমের সঙ্গে মৌসুমির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দাবি করে মনগড়া অনেক পোস্ট-স্ট্যাটাস বাড়ছেই। এ নিয়ে তাই বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন মৌসুমি। বাধ্য হয়েই এতদিন চুপ থাকলেও অবশেষে মুখ খুলেছেন তিনি।
মৌসুমি হামিদ বলেছেন, ‘ধর্ষক নাঈমের সঙ্গে ওই একবারই আমার দেখা হয়েছে। এর আগে অরিজিত সিং ও নেহা কাক্করের কনসার্টে পারফরম করার জন্য সে (নাঈম আশরাফ) আমাকে বলেছিল। তবে যে কোনো কারণে আমি কাজটি করিনি।’
সেলফির ব্যাপারে মৌসুমি বলেন, ‘২০১৫ সালে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত নেপালের সহযোগিতায় ‘কনসার্ট ফর নেপাল’-এ আমাদের এক সহকর্মীর আমন্ত্রণে রাজধানীর কলাবাগান মাঠে যাই। সেখানে কনসার্টে পার্থ বড়ুয়াসহ মিডিয়ার অনেক সেলিব্রেটি অংশ নেন। আমি জানতাম না আয়োজনটির সঙ্গে ধর্ষক নাঈম জড়িত। ছবিটি সে সময়ের। কারো চেহারা দেখে তো ভালো মন্দ বুঝার কোনো উপায় নেই। তবে সম্প্রতি ধর্ষকের সঙ্গে ওই ছবি নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে আমাকে জড়িয়ে। আমি খুবই বিব্রত। একটা সেলফি তোলার দায় কখনো নেয়া যায় না।’
মৌসুমি আরও বলেন, ‘আজ আমি অভিনেত্রী বলে, শোবিজে কাজ করি বলে আমাকে নিয়ে যতো সমালোচনা হচ্ছে। আমার মতো আরও অনেক শিল্পী বা তারকাদের নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু ওই ধর্ষকের সঙ্গে তো আরও অসংখ্য মানুষের সেলফি আছে যারা শোবিজের বাইরের মানুষ। অনেক গণমান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও নাঈম আশরাফের সেলফি রয়েছে। তাদের নিয়ে তো কোনো আলোচনা দেখি না। কোনো গণমাধ্যমও সেইসব সেলফি নিয়ে উস্কানি দিয়ে কোনো সংবাদ লেখে না। তবে সবাই মিডিয়ার মানুষকে নিয়ে সমালোচনা করতে মজা পায় কেন!’
মৌসুমি আরও বলেন, ‘একটা খুনের শাস্তি মৃত্যদণ্ড না হলেও একটা ধর্ষণের শাস্তি অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। প্রত্যেকটা ধর্ষণ মামলার বিচার যেন অবশ্যই এবং দ্রুত কার্যকর করা হয়। এটা পৃথিবীর জঘন্যতম অপরাধ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়ে বন্ধুদের সহায়তায় ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই তরুণী। ওই ঘটনার ৪০ দিন পর ৬ মে সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন তারা। মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি হলেন- সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ ও নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও তার দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ (রহমত আলী)। বর্তমানে তারা সবাই গ্রেফতার হয়েছেন।