আমাদের জাতীয় দলের বাংলাদেশ সফর বাতিল। জুলাইতে যে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সিরিজ ছিল, তা বাতিল করা হলো। আমরা বাংলাদেশে দল পাঠাবো না, এই ঘোষণা বা কথাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবিকে জানায়নি পিসিবি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি শাহরিয়ার খানকে উদ্ধৃত করে যদিও পাকিস্তানের প্রচার মাধ্যম বেশ ঘটা করেই এ সংবাদ প্রকাশ করছে।
কিন্তু পিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে সফর বাতিলের কথা জানায়নি বিসিবিকে। আনুষ্ঠানিকভাবে সফর বাতিলের প্রস্তাব না পেয়েই বিসিবি সফর সূচি চূড়ান্ত করে পাঠিয়েছে পিসিবিকে। তার জবাব আসেনি এখনো। তবে ধরেই নেয়া হচ্ছে পাকিস্তান আসছে না। এইতো ক`দিন আগে ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জের ঘিওরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, ‘আমরা ধরেই নিয়েছি পাকিস্তান আসবে না।’
পাকিস্তান খেলতে না আসলে ঐ সময়ে (জুলাইতে) আর কোন টেষ্ট খেলিয়ে দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পূর্নাঙ্গ সিরিজ কিংবা ওয়ানডে তথা বিকল্প সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করবে বিসিবি? এক সময় বোর্ড প্রধানই এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে সর্বশেষ মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত না আসলেও বিকল্প সিরিজ হবে কিনা, তা নির্ভর করছে ক্রিকেটার ও কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের উপর। কারণ ক্রিকেটাররা টানা খেলায় ক্লান্ত। মোদ্দা কথা, হাথুরুসিংহে মাশরাফি, মুশফিক, তামিম ও সাকিবরা চাইলেই কেবল বিকল্প সিরিজ হবে। অন্যথায় নয়।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, যদি কোন সিরিজই না হয়, তাহলে কি জাতীয় ক্রিকেটাররা ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লিগ খেলতে পারবেন? এ কৌতূহলী প্রশ্ন ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে উকি ঝুঁকি দিচ্ছে।
এদিকে আজ শুরু হয়েছে প্রিমিয়ার লিগের দশম রাউন্ড। আবহাওয়া বৈরি আচরণ না করলে আগামী ২১ মে শেষ হবে প্রথম পর্ব। আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের গ্রুপ ম্যাচ শেষ হবে ৯ জুন। স্বাগতিক ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে অন্তত দ্বিতীয়স্থান না পেলে দ্বিতীয় পর্ব তথা সেমিফাইনাল খেলা হবে না। তখন দেশে ফিরে আসতে হবে মাশরাফিবাহিনীকে। তার মানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বে বিদায় নিলে ১১/১২ জুনের মধ্যে দেশে ফিরে আসতে পারবেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
যদি তাই হয়, তাও তাদের পক্ষে সুপার লিগ খেলা সম্ভব নয়। কারণ প্রিমিয়ার লিগ কমিটির কো-অর্ডিনেটর আমিন খান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, তারা ২৫ কিংবা ২৬ মে সুপার লিগ শুরুর কথা ভাবছেন। ছয় দলের সুপার লিগ। এখনকার মত প্রতি পর্বে এক দিনে ছয় দল মাঠে নামবে। আবার দুদিন পর আরেক ম্যাচ। এভাবে ফিকচার করলে সর্বোচ্চ ১৫ দিনে সুপার লিগ শেষ হয়ে যাবে। তার মানে ২৬ মে শুরু হলেও ১০ জুনের মধ্যে সুপার লিগ শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ প্রথম লিগ শেষে সুপার লিগ বিলম্বে শুরু করলেই কেবল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়া ক্রিকেটারদের পক্ষে সুপার লিগে অংশ নেয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে ২১ মে প্রথম লিগ শেষ হলে সুপার লিগ অন্তত তিন সপ্তাহ দেরিতে শুরু করতে হবে। ১২ কিংবা ১৩ জুন সুপার লিগ শুরু হলেই কেবল মাশরাফি, তামিম, সাকিব ও মুশফিকরা সুপার লিগ খেলতে পারবেন।
তবে এটাই শেষ কথা নয়। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা প্রিমিয়ার সুপার লিগ খেলতে পারবেনই না, খেলবেন না এ কথা জোর দিয়েও বলা যাবে না। প্রিমিয়ার লিগের কো-অর্ডিনেটর আমিন খানের কথায় পরিষ্কার, এটা নির্ভর করবে ক্লাবগুলোর ইচ্ছের উপর। ক্লাবগুলো ২০/২২ দিন দেরিতে শুরু করতে রাজি হলেই শুধু মাশরাফি, সাকিব, তামিম ও মুশফিকদের সুপার লিগ খেলা সম্ভব। অন্যথায় নয়।
জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়ে আমিন খান বলেন, ‘আমরা প্রথম লিগ শেষে ( ২১ মে`র পর) ক্লাবগুলোকে নিয়ে বসবো। সেখানে সুপার লিগের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারিত হবে। যদি বেশির ভাগ বা সব ক্লাব চায়, তাহলেই কেবল সুপার লিগ দেরিতে শুরুর সম্ভাবনা আছে।