ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় বাফার গোডাউনে ৭ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে।
বিসিআইসি ডিলাররা দীর্ঘদিন সার উত্তোলন না করায় গোডাউনে ইউরিয়া সারের মজুদ দিন দিন বাড়ছে।
কালীগঞ্জ বাফার গোডাউনের ইনচার্জ আব্দুল মালেক জানান, দক্ষিণবঙ্গের কৃষি প্রধান জেলা ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গার ২২৪ জন সার ডিলার কালীগঞ্জ বাফার গোডাউন থেকে ইউরিয়া সার উত্তোলন করেন।
তিনি জানান, গত মার্চ মাসে বরাদ্দকৃত ৬ হাজার মেট্রেক টন সার বিসিআইসি ডিলাররা এখনও তোলেননি। উপরন্তু এপ্রিল মাসের বরাদ্দও চলে এসেছে।
তিনি জানান, ১০ হাজার মেট্রিক টনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বাফার গোডাউনে জায়গা না হওয়ায় অতিরিক্ত সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন সার বাইরে রাখতে হয়েছে।
গোডাউনের ইনচার্জ আব্দুল মালেক জানান, সারের চাহিদা কমসহ নানা কারণে ডিলাররা সার তুলছেন না।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ বিসিআইসি ডিলার সমিতির সভাপতি হাজী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ইরি মৌসুমের শেষ দিকে কৃষকদের মধ্যে সারের চাহিদা নেই। যে কারণে সার বিক্রি হচ্ছে না। তাছাড়া সারের মুল্যবৃদ্ধির কারণেও ইউরিয়া সারের ব্যবহার এ বছর অনেক কমে এসেছে।
তবে তিনি দাবি করেন, প্রতিমাসের বরাদ্দ সার যে একবারেই ডিলাররা তুলছেন না তা নয়। কোটা অনুযায়ী সার না তুললে তো তো ডিলারশিপ থাকবে না।
ঝিনাইদহ নতুন হাটখোলায় রিপন কুমার নামে বিসিআইসির এক সার ডিলার জানান, সারের মুল্যবৃদ্ধির কারণে এ বছর ইরি আবাদ কমেছে।
এ জন্য ইউরিয়া সারের চাহিদাও কম। তিনিও জানান চাহিদার তুলনায় সারা বরাদ্দ বেশি আসছে। এ জন্য গোডাউন ভরে যাওয়ার পর বাইরে ইউরিয়া সার রাখতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আড়মুখ গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করেছেন। কিন্তু এবার তিনি যে ইউরিয়া সার জমিতে প্রয়োগ করেছেন, তাতে গুণাগুণ কম ছিল।
সার খোলা আকাশের নিচে রাখার বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, ইউরিয়া সারের মুখ পলিব্যাগ দিয়ে ভালো করে বাঁধা থাকলে চার মাস বাইরে থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না।
তিনি জানান, তবে ভেতরের পলি ব্যাগ নষ্ট হয়ে গেলে বাস্পায়িত হয়ে ইউরিয়া সারের গুণাগুণ নষ্ট হয়। পরিমাণেও কমে যায়।
এ বিষয়ে নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক খাজা আব্দুল হান্নান জানান, বাইরে থাকা সার বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উপকারভোগীদের মধ্যে বিনামুল্যে সার বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর আওতায় কালীগঞ্জ বাফার গোডাউনের বাইরে থাকা সারগুলো বিতরণ করা হবে। এতে সমস্যা মিটবে বলে আশা করা যায়।