তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বিএবি’র ১৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান

তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বিএবি’র ১৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (বিএবি) ১৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে তিনটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সমাজকল্যাণ ও শিক্ষা খাতে এবং প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতার জন্য প্রদান করেছে।
এই সংগঠনগুলো হচ্ছে- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড এবং সূচনা ফাউন্ডেশন, যে সংস্থাটি প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন প্রতিবন্ধীদের সাহায্যার্থে পরিচালনা করেন।
সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩৭টি ব্যাংকের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তাঁদের কাছ থেকে এই অনুদানের চেক গ্রহণ করেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সেনাবাহিনী প্রধান আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ, বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার এবং উর্ধ্বতস কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএবি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টকে ৫৭ কোটি ৪৫ লাখ, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টকে ৫০ কোটি ২৫ লাখ এবং সূচনা ফাউন্ডেশনকে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রদান করে।
ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৫ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ কোটি এবং ৯টি ব্যাংক ৫ কোটি করে এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৪ কোটি করে অনুদানের টাকা প্রদান করে।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিএবি সভাপতি তাদের ২৭ জন সদস্যের পক্ষ থেকে ২৭টি গোলাপ সজ্জিত তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
ব্যাংক সদস্যরা দুস্থ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য তাদের সহযোগিতার হাতকে প্রসারিত করায় প্রধানমন্ত্রী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাঁর সরকার শিক্ষা ব্যয়কে সকলের নাগালের মধ্যে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে শিক্ষায় সহায়তা প্রদানের জন্যই সরকার শিক্ষা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারের ১ হাজার কোটি টাকা দিয়ে এই ট্রাস্ট ফান্ড চালু করি। আমরা চাই এই জনহিতকর কাজে বেসরকারি সংস্থাগুলো যেন অরো এগিয়ে আসে। এসব শিক্ষা এবং প্রতিবন্ধীদের প্রতি সাহায্যসমূহ শুল্কমুক্ত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দেশের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনয়নে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলো কর্মসংস্থানেও বিশেষ অবদান রাখছে।
পরে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) অধীন ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শিল্প সংস্থার একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড এবং প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডে ২৯ কোটি ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করে।
বেপজার নির্বাহীর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান খান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের জন্য ২ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করে।
এছাড়া মেসার্স প্যাসিফিক জিন্সের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভির, মেসার্স স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান, এভারগ্রিন গ্রুপের চেয়ারম্যান চ্যাং ইও চং ফেলিক্স, মেসার্স কুন টং এ্যাপারেলস লিমিটেডের নিলেশ জইন, মেসার্স এপিক গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রেম সনি, অনন্ত গ্রুপের শরিফ জহির, মেসার্স কাতার মারবেল কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের জালাল আহমেদ এবং ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল (অব.) আবুল মুবীনও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করে।
আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএম এনামুল হক প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তার তহবিলে ৩ কোটি টাকা প্রদান করে। এছাড়া আমান গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীন, আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মনোয়ার হোসেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ইউনিক গ্রুপের এমডি মোহাম্মদ নূর আলী, দেশ এনার্জির এমডি নাভিদুল হক, ইন্নোভেনচার প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত এবং মেঘনা গ্রুপ ২ কোটি টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা তহবিলে প্রদান করে।
পাশাপাশি এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ, টাটা মটর্সের বাংলাদেশ প্রধান জিতেন্দ্র বাহাদুর, বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভি চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম এবং ক্রাউন সিমেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ১ কোটি টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা তহবিলে প্রদান করে।

বাংলাদেশ