পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগী শান্তি কমিটি, আলবদর, আলশামস রাজাকার বাহিনীর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তৎপরতায় অংশ নেওয়ার কাগজপত্র ১৯৭৫ পরবর্তী সরকার বিনষ্ট করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ক্ষমতায় এসে তৎকালীন সরকার এসব কাগজপত্র নষ্ট করে দেয়।
বৃহস্পতিবার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন এসব কথা বলেন।
এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ২৮তম সাক্ষী মো. হেলালউদ্দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ টানা অষ্টম দিনের সাক্ষ্য দেন। বিচারপতি নিজামুল হকে নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে বিচার চলছে।
এদিন এটিএন বাংলার তৈরি সচিত্র প্রতিবেদন ‘একাত্তরের ঘাতকরা’, ভারতীয় টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত প্রতিবেদন ‘ডায়েরি অন বাংলাদেশ’, যশোর পরিদর্শন করে হেলালউদ্দিনের তৈরি ভিডিওচিত্র ও স্থিরচিত্র এবং পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পাড়ের ভিডিওচিত্র ‘ভাগীরথীর স্তম্ভ’ প্রদর্শিত হয়। ৭১-এ বলেশ্বর নদীরপাড়ে ভাগীরথীর স্বামীকে হত্যা করা হয়।
সাক্ষ্য দিতে এসে এদিন ট্রাইব্যুনাল-১-এ হেলালউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনের দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর থেকে পালিয়ে যশোরের দহখোলা গ্রামে রওশন নামের এক লোকের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এখানে বেশ কিছুদিন থাকার পর রাজাকার পরিচয় জানাজানি হয়ে গেলে তিনি সেখান থেকেও পালিয়ে যান। এরপর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে পিরোজপুরে ফিরে আসেন। এখানে ওয়াজ-মাহফিল করেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। দুইবার সংসদ নির্বাচিত হয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নিজের করা অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে এ দেশের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ হারান। সম্ভ্রম হারান দুই লাখ নারী। ওই সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।