বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অর্থপাচার (মানি লন্ডারিং) মামলার সাক্ষী সাবেক সাবেক ডিবি ইন্সপেক্টর বর্তমানে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আলীমুজ্জামানকে ফের আংশিক জেরা করেছেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার সুপ্রীমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সাক্ষীকে জেরা করেন।
ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মোজাম্মেল হোসেইন সাক্ষীর আংশিক জেরা শেষে বাকি জেরার জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল দিন ধার্য্য করেছেন।
ইন্সপেক্টর মীর আলীমুজ্জামান ছিলেন মামুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা গুলশান থানার ৯(৫)০৭ নম্বর চাঁদাবাজির মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তিনি তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ পান। তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ মামলাটি দায়ের করে দুদক।
মীর আলীমুজ্জামানকে আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে জেরা শুরু করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। ২/৩টি প্রশ্নের পর গুলশান থানার ৯(৫)০৭ নম্বও মামলা সম্পর্কে খন্দকার মাহবুব হোসেন তাকে প্রশ্ন করলে ওই মামলার সিডি ছাড়া তিনি উত্তর দিতে পারবেন না বলে জানালে জেরা মুলতবি করেন আদালত।
মামলাটিতে এ পর্যন্ত ৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে এ পর্যন্ত তিনজনের জেরা শেষ হয়েছে। তারা হলেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এজেন্ট ডেবরা লেপরোভেটি, মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও মামলার নিবন্ধন কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হোসনে আরা বেগম।
সাবেক ডিবি ইন্সপেক্টর বর্তমানে ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আলীমুজ্জামান ও গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন মামলায় সাক্ষ্য দিলেও তাদের জেরা শেষ হয়নি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় একটি ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হলে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার তারেক রহমানের মাধ্যমে কার্যাদেশ পাইয়ে দেবার কথা বলে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা গ্রহণ করে তা বিদেশে পাচার করেন।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার বন্ধু মামুনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
গত বছরের ৬ জুলাই তিনি তারেক ও মামুনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে গত বছরের ৮ আগস্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন একই আদালত। ওইদিন তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম ও সানাউল্লাহ মিয়া। দুদকের পক্ষে ছিলেন, অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল।