রাজধানীর ভয়ঙ্কর নারী ‘কাজের বুয়া’ পারভিন

রাজধানীর ভয়ঙ্কর নারী ‘কাজের বুয়া’ পারভিন

ভয়ঙ্কর এক কাজের বুয়া। কাজের অন্তরালে রয়েছে তার দুর্ধর্ষ কাহিনী, শুনলে আঁতকে উঠবেন। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাজ নেয়া তার পেশা। এ কাজে রয়েছে তার একটি গ্রুপ। ওই গ্রুপের প্রধান পারভীন আক্তার শাহীনুর ওরফে আলপিনা খাতুন। বয়স তার ২৮। তিনি রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বাসা-বাড়িতে বুয়ার কাজ নেন। এরপর লুটে নেন সর্বস্ব।  মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। একইসঙ্গে এ চক্রের আরো ৬ সদস্যকে আটক করেছে। বাসা-বাড়িতে ঢুকে সর্বস্ব লুটে নেয়া চক্রের অন্যতম পারভিন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশে।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, বাসা-বাড়ির লোকজনকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়াই তার নেশা। পরপর দুটি ঘটনার পর তাকে আটক করে পুলিশ। পরে রিমান্ডে তার দেয়া তথ্যে এ চক্রের আরো ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় চুরি করা স্বর্ণ।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম বলেন, গত ৫ মার্চ দুপুরের ঘটনা। গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ির ই/১ ফ্ল্যাটে কাজের বুয়া হিসেবে কর্মরত ছিল পারভীন আক্তার। বাসাটির আলমারির তালা ভেঙে ৬০ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নেন তিনি। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের হয়।

তিনি জানান, মামলার তদন্তকালে ডিবি উত্তর গুলশান জোনাল টিমের তদন্তকারী অফিসার কাজের বুয়া পারভিনকে গত ৪ মে তার নিজবাড়ি নেত্রকোনা থেকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে তার নিজ বসত বাড়ির টিনের ঘরের মাটির নিচ থেকে ১৮ ভরি ওজনের স্বর্ণের হার উদ্ধার করা হয়। তাকে রিমান্ডে পেয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে এ চক্রের শুভ বণিক (২০), ভানু লাল বণিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া ব্রাহ্মনবাড়ীয়া থেকে অমৃত দেবনাথকে (৫০) গ্রেপ্তার করে তার থেকে তিন ভরি ওজনের গলানো স্বর্ণ উদ্ধার হয়।

এ ঘটনার আগেও বারিধার এলাকার খন্দকার জামিল উদ্দিনের বাসা হতে ২৭ ভরি ওজনের স্বর্ণ ও ডায়মন্ডের অলঙ্কার চুরি করে পালিয়ে যায় পারভিন। এ ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা হয়। মামলার আসামী পারভিনকে সনাক্ত করা হয়। ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার শ্যামগঞ্জ বাজারের স্বর্ণকার কৃষ্ণ চন্দ্র কর্মকারকে চোরাই স্বর্ণ কেনার অপরাধে ও সুজন বণিককে (২৮) ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার লাখী বাজার হতে গ্রেপ্তার করলে ২৫ পিস ডায়মন্ড উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রত্যেকেই পারভিনের কাছ থেকে চোরাই স্বর্ণ ও ডায়মন্ড ক্রয়ের কথা স্বীকার করেন।

গোয়েন্দা পুলিশ আরো বলছে, এই চক্রের কাজ রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাজের বুয়া হিসেবে বাসায় প্রবেশ করা। এরপর সুযোগ বুঝে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যাওয়া। বাসায় কাজের বুয়া নিয়োগের ক্ষেত্রে বাসার মালিকদের আরো সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ গোয়েন্দা পুলিশের।

বাংলাদেশ