ধর্ষক সাফাত আহম্মেদের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়েই সে আমার সম্পর্কে জানতে চায় ,আমি সব বলার পর সে তার নাম বলে জানাল সে বিবাহিত, তারপর উচ্চস্বরে অকথ্য ভাষায় বলে উঠলো তার স্ত্রী খারাপ ছিল। নানা রকম অশ্লীল ও অকথ্য সম্বোধন করে বলে তাই সে তার ওয়াইফকে ডির্ভোস দিয়ে দিয়েছে। সে জানায়, তার নাকি আমাকে ভালো লেগেছে বলে আমাকে কষ্টের কথাটা বলেই ফেলল। তার এই আচরনের পর থেকেই আমি তাকে এড়িয়ে চলা শুরু করি। গতকাল বনানীর অলোচিত ধর্ষণ মামলার বাদী একান্ত স্বাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
বাদীর ভাষ্য মতে, দু’বছর আগে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কাজের মাধ্যমে সাদমান সাকিবের সাথে পরিচয় হয় আমার। এই দুই বছরে বিভিন্ন ইভেন্টের কাজের জন্য ওর সাথে বন্ধত্বটা গড়ে উঠে। তাই নতুন কোন কাজের সুযোগ হলেই গুলশান লিংকরোডে পিকাসো রেস্টুরেন্টে স্বাক্ষাত করে কাজের কথা বলতাম। পিকাসোতে দেখা করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওটা সাদমানের বাবার রেস্টুরেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছিল সাদমান নিজেই। এরকমই একদিন আমি ও আমার বন্ধবী পিকাসোতে কথা বলতে গেলে সেখানেই সাদমান সাকিব আমাকে ও আমার বান্ধবীকে সাফাত আহম্মেদসহ আরও কয়েকজনের সাথে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টে ওনার বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। সে সময় আমার নাম, কোথায় পড়াশোনা করছি এগুলো জানতে চায়।
‘এভাবে মাসখানেক যাওয়ার পর সাদমান সাকিব মাধ্যমে জম্মদিনের দাওয়াত দেন ও অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করেন সিফাত আহম্মেদ। বার বার না করার পরও কোন সমস্যা হবেনা বলে আশ্বস্ত করলেও যখন যেতে রাজি হচ্ছিলাম না তখন তার গানম্যান (বডির্গাড) ও গাড়ির ড্রাইবার কে পাঠায়। গাড়িটি যখন আমাদের নিতে আসে সাদমান ওদের সাথেই একই গাড়িতে আমাদের নিতে আসে। উপায়াপন্ত না পেয়ে অনেক অনুরোধের পর আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে ওদের গাড়িতে সেখানে গিয়েছিলাম। যেখানে আমাদের সঙ্গে একটা ছেলে বন্ধু রয়েছে সেখানে এমন কিছু হতে পারে আমরা ভাবতেই পারিনি।’
‘আমাদের বলা হয়েছিলো বলেছিল, রেইন ট্রি রেস্টুরেন্টের ছাদে সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানটি হবে কিন্তু সেখানে পৌছানোর পর রেস্টুরেন্টের পরিবেশ আমার ও আমার সাথে আসা সব বন্ধুদের কারই ভালো লাগেনি। আমরা চলে আসার জন্য আমাদের ছেলে বন্ধুটিকে সাদমান কে তাড়া দিতে থাকি এসময় সে আমাদের নিয়ে বের হয়ে আসতে চাইলে সাদমানকে ২ নম্বর আসামী ও বডিগার্ড মামলার চার নম্বর আসামী সাদমানকে অনেক মারধর করে, আমাদের অন্য রুমে নিয়ে যায়। অন্য রুমে যখন নিয়া যাওয়া হলো আমাদের তখনও বুঝিনি অবশেষে আমাদের ওরা ধর্ষণ করার জন্য এত সব মিথ্যা আয়োজন করে এখানে নিয়ে এসেছে। কোন উপায় না দেখে বার বার ওদের অনুরোধ করি আমাদের ছেড়ে দাও,আমার বান্ধবী কাঁদতে কাঁদতে ২ নম্বর আসামী নাঈমের পায়ে পড়লে তখন নাঈম ওকে কয়েকটা থাপ্পড় মারে, থাপ্পড় মারার সময় ও নিজেকে রক্ষা করতে হাত দিয়ে মুখ ডাকতে গেলে ওর হাতে ফোন দেখে ওরা আমাদের ফোন আর ঘড়ি নিয়ে নেয়, তখন আমরা এক প্রকার নি:স্ব হয়ে পড়ি।
কিছুটা থেমে বাদী আবার বলেন, রাত তখন কত বা কততমবার ধর্ষিত হলাম বলতে পারবোনা পরিচিত একটি কন্ঠস্বর শুনে চোখ খুলতেই দেখি সাদমান আমাদের রুমে আমাদের দেখে চলে গেলো। তখনই বুঝতে পারি এসব বন্ধুত্ব কিছুই নয় ও আসলে আমাদের বিক্রি করেছে কিছু হিংস্র কুকুরের কাছে ও আসলে একটা দালাল শুধু ইচ্ছা করলেই আমাদের জন্য কিছু না পারুক পুলিশকে জানাতে পারতো। ২৮ মার্চ এসব নিয়ে কথা বললে সাদমান এসব অস্বীকার করে। ওর ভাষ্য সাফাত, নাঈম আর আমরা দু’জন একসঙ্গে বসেছিলাম, ওদেরকে কতভাবে অনুরোধ করেছি কিন্তু ওরা কথা শোনেনি ওরা অনেক ড্রাংক ছিল।
সাফাতের ড্রাইভার বিল্লাল সব ভিডিও করেছে। তবে সেই রাতে নাঈম সবকিছু করেছে, সেই সবচেয়ে বেশি নোংরামি করেছে। আর নাঈমের দেখাদেখি সাফাতও তাই করেছে।
সবশেষে সাফাতের বাবা আপন জুয়ের্লাসের মালিক দিদার আহম্মেদ ও সাফাত আহম্মেদকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আমরা তো অভিযোগ করেছি, এখন তারাই বলুক তারাতো ইনোসেন্ট সেদিন রাতে কী হয়েছে আমরা যদি মিথ্যা বলে থাকি তাহলে তারা পালিয়ে বেড়াছে কেন তারা সত্য প্রকাশ করুক।