আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ২০০৯ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিগত ৮ বছরে মোট ২ লাখ ৩১ হাজার ৬২৬ জনকে সরকারি আইনি সেবা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৯ জনকে মামলায় আর্থিক সহায়তা, কারাগারে আটককৃত ৪০ হাজার ৭১৫ জনকে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৬৪ হাজার ৫৪৬টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।’
আগামী ২৮ এপ্রিল জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে বুধবার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কার্যকর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এখন দেশের অসহায় ও দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের জন্য এক আলোক বর্তিকায় রূপ নিয়েছে। ‘বর্তমানে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে বিদ্যমান মামলাজট কমানোর পাশাপাশি আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে আমরা আরো একধাপ এগিয়ে যাবো।’
আনিসুল হক বলেন, বিচারক, আইনজীবী, সরকারি-রেসরকারি সংগঠন ও গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরের মানুষের অকুন্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পেলে সরকারি আইনি সেবা কার্যক্রম আরও কার্যকর, গতিশীল ও শক্তিশালী হবে।
আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থীকে সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে আগামী ২৮ এপ্রিল দেশে ৫ম বারের মত জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালন করা হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ – ‘বিরোধ হলে শুধু মামলা নয় লিগ্যাল এইড অফিসে আপোষও হয়।’
এ উপলক্ষে ২৮ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ১০ টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দিবসের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া, তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি আইনি সেবার বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্য সারাদেশে লিগ্যাল এইড র্যালী, মেলা, পথ নাটিকা, টক-শো, গোল টেবিল বৈঠক, সভা-সেমিনার, মাইকিং ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার প্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে আইনগত সহায়তা প্রদান কল্পে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণীত হয় এবং গঠন করা হয় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা। আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে গতিশীল ও সেবাবান্ধব করার লক্ষ্যে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার আওতায় প্রত্যেক জেলায় জেলা লিগ্যাল এইড অফিস স্থাপনসহ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, চৌকি আদালত এবং শ্রম আদালতে লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসসমূহে একজন করে সিনিয়র সহকারী জজ/সহকারী জজ পদমর্যাদার অফিসারকে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি। মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।