এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভুটানের সাবেক রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক।
রাজা অন্যান্য ক্ষেত্রেও আরো সমৃদ্ধির জন্য তাঁর (শেখ হাসিনা) নেতৃত্ব কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আপনার নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে। বিদ্যুৎ খাত, যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পানি ব্যবস্থাপনার মতো খাতে এই সহযোগিতা এ অঞ্চলের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে সহায়ক হবে।’ ভুটানের সাবেক রাজা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ভুটানের রাজাকে উদ্ধৃত করে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বর্তমান রাজা জিগমে খেসার নামগেলের পিতা জিগমে সিংগে ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠকটি গতরাতে থিম্পুর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিষয়ে যৌথভাবে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় উপ-প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক রাজা বলেন, সকল দেশের সঙ্গে সমান বন্ধুত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা দৃষ্টান্তযোগ্য।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বৈঠকে সাবেক এই রাজা তিনবার এমন প্রশংসা বাক্য উচ্চারণ করে বলেছেন, বিশ্ব নেতৃবৃন্দেরও তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছুই শিক্ষণীয় রয়েছে। ভুটানের ৪র্থ রাজা হিসেবে পরিচিত ওয়াংচুক বলেন, কি করে শেখ হাসিনা বছরের পর বছর এগুলো করে যাচ্ছেন দেখে তিনি হতবাক হয়ে যান। রাজা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এই অঞ্চলকে সম্ভাবনার নতুন পথে নিয়ে যেতে পারে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর জবাবে এ প্রসঙ্গে জাতির পিতার দর্শনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরীতা নয়- জাতির পিতার এই আদর্শ এবং দর্শনকে ধারণ করে এবং তাঁর পদাংক অনুসরণ করেই চলার চেষ্টা করছে তাঁর সরকার। যদিও কাজটা কঠিন, আমরা সার্থকভাবেই তা করতে সক্ষম হয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বিশ্বের সকল অঞ্চলের সব দেশের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
ভুটানের সাবেক রাজা এবং তাঁর পরিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কিছু সময় অতিবাহিত করেন এবং রাজার পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর তিনদিনের সরকারি ভুটান সফরেও সঙ্গ দেন। বৈঠকে রাজা মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে (সাবেক রাজা) ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ভুটানের সাবেক রাজাকে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ভ্রমণকালিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তোলা একটি ফটো উপহার হিসেবে প্রদান করেন।
ওয়াংচুক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে একজন দূরদর্শী, পর্বতপ্রমাণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
পরে, ভুটানের বর্তমান রাজা জিগমে খেসার নামগেলের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজপ্রসাদে আয়োজিত ভোজ সভায় যোগ দেন। সেখানে ভুটানের রাজা এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একান্তে কিছু সময় অতিবাহিত করেন। এছাড়া, ভুটানের চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থী যারা বাংলাদেশে লেখাপড়া করছে তারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হোটেলে সাক্ষাৎ করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর তিনদিনের সরকারি সফর শেষে ভুটান থেকে দেশে ফিরেছেন।
প্রধানমন্ত্রী অটিজম এবং নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ভুটান আসেন।