কাঁধের ইনজুরির কারণে আইপিএলের শুরুতে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে মাঠে নামতে পারেননি বিরাট কোহলি। তার নেতৃত্বও মিস করেছে দলটি। কোহলির অনুপস্থিতিতে কেন যেন নিস্প্রভ ছিলেন ক্রিস গেইলও। তার ব্যাট কথা বলছিল না। অবশেষে কোহলি ফিরলেন। দলও একটা-দু’টা জয় পেয়েছে। ক্রিস গেইলের সঙ্গে ব্যাটিং ওপেনও করছেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক।
সেই গেইলের আসল রূপ দেখা গেলো মঙ্গলবার। রীতিমত টর্নেডো। ৩৮ বল খেললেন। রান করলেন ৭৭টি। এ না হলে গেইল! কোহলিও তাল মেলালেন ক্যারিবীয় দানবের সঙ্গে। ৫০ বলে করলেন ৬৪ রান। দু’জন মিলে প্রথম উইকেট জুটিতেই তুললেন ১২২ রান। গেইল-কোহলি জুটি যে আইপিএলে এত বেশি কার্যকর, সেটা প্রমাণ হলো আরও একবার। এ নিয়ে যে, দু’জন মিলে ১০ বার শত রানের জুটি গড়লেন!
মাঠের জুটি মঙ্গলবারের ম্যাচের বসে গেলেন একে অপরের সামনে। একেবারে মুখোমুখি লড়াই। আইপিএলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের সৌজন্যে গেইলের সাক্ষাৎকার নিলেন কোহলি। দু’জনের মাঝে কথোপকথন যা হল-
কোহলি: ক্রিস, আমার সঙ্গে ওপেন করতে তোমার কেমন লাগে?
গেইল: দারুণ। তুমি তো কিংবদন্তি, বন্ধু। আরও অনেক অনেক রান করবে। তোমার সঙ্গে ওপেন করাটা আমার কাছে খুব আনন্দের। উল্টোদিক থেকে তোমাকে মসৃণভাবে রান করতে দেখে ধন্য হই। যা করেছ, সে জন্য অনেক অভিনন্দন আর তোমার জন্য হৃদয় থেকে আরও অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
cheer
কোহলি: টি-টোয়েন্টিতে এটা আমাদের দশ নম্বর একশো রানের পার্টনারশিপ। আর এটা একটা রেকর্ডও। তুমি দশ হাজার রানে পৌঁছলে। ৪০-এর গড় আর ১৪৯-এর স্ট্রাইক রেট, ১৮টা সেঞ্চুরি! পাগলের মতো পরিসংখ্যান। তোমার সঙ্গে ওপেন করে আমিও ধন্য; কিন্তু এত বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে ‘ইউনিভার্স বস’ হয়ে থাকলে কী করে?
গেইল: দশ হাজার রান পাওয়াটা দুর্দান্ত ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা এই মুহূর্তটা তোমার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। আমরা একসঙ্গে বহু ভালো জুটি গড়েছি। তাছাড়া বেঙ্গালুরুর মতো ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার সুযোগ পাওয়াটাও দারুণ ব্যাপার। এখানে যোগ দেওয়ার পর থেকে আমার সব কিছুই ভাল হচ্ছে। ক্রিকেট থেকে ব্যক্তিগত জীবন, সব কিছুই। সে জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ধন্যবাদ। তোমরা বরাবরই আমার কাছে স্পেশ্যাল আর তোমাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নিতে পারাটাও দারুণ অভিজ্ঞতা।
কোহালিকে ইন্টারভিউ দেওয়া শেষ করে গেইল গেলেন সংবাদ সম্মেলনেও। সেখানে গিয়ে বললেন, ‘ব্যাট করতে যাওয়ার আগে স্যামুয়েল বদ্রি আমাকে মনে করিয়ে দেয় যে, আমি দশ হাজার থেকে মাত্র তিন রান দূরে আছি। তাই ব্যাপারটা মাথায় ছিলই। মাইলস্টোনটা পেরিয়ে যাওয়ার পরেই নিজেকে বলেছিলাম, চলো ঝাঁপিয়ে পড়ো।’
নিজেকে আসল জায়গায় ফিরিয়ে আনতে পেরে খুশি গেইল বলেন, ‘লোকে শুধু আসল ক্রিস গেইলকে খুঁজে পেতে চায়। ইউনিভার্স বস আছে, এখনও বেঁচে আছে। এ ভাবেই মানুষকে আনন্দ দিয়ে যেতে চাই।’
ব্যাটিংয়ের মানসিকতা বদলেই যে নিজেকে ফিরিয়ে আনতে পারলেন, তা জানিয়ে গেইল বলেন, ‘শন পোলক ও স্যামুয়েল বদ্রি আমাকে মনে করিয়ে দেয় যে, আমি দশ হাজার থেকে মাত্র তিন রান দূরে আছি।’