আগের রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। সংশয় ছিল আজ আদৌ খেলা হবে কি না, হলেও নিশ্চয়ই আকার ছোট হয়ে কর্তিত ওভারের ম্যাচ হবে। পিচ ও আউটফিল্ড ঢাকা থাকায় সব সংশয় কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত খেলা হলো।
কর্তিত ওভারের ম্যাচে নাসির হোসেনের গাজী ট্যাঙ্কের কাছে পাত্তাই পেলো না মুশফিক-মাশরাফির লিজন্ডস অব রূপগঞ্জ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রূপগঞ্জের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ১৫৬ রান। ২ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় গাজী ট্যাঙ্ক। ১১ ওভার হাতে রয়েছে ৮ উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নাসির হোসেনের দল।
৪৭ ওভারের ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিলেন মুশফিকুর রহীম। যতই ঢাকা থাকুক, আগের রাতে ভারি বর্ষণে উইকেটের চরিত্র পাল্টেছে খানিকটা। বেশি সময় ঢাকা থাকায় হয়ত আদ্রতাও তৈরি হবে।
এমন কন্ডিশনে টস জিতে আগে ব্যাট বেছে নেয়ায় ছিল ঝুঁকি। শেষ পর্যন্ত ওই ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তই হলো কাল। সম শক্তির লড়াই এক সিদ্ধান্তের কারণে হয়ে গেল এক তরফা। ৮ উইকেটের সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো নাসির হোসেনের গাজী ট্যাংক।
আগের রাতে বৃষ্টি ভেজা উইকেটে বৃহষ্পতিবার সকালটা হয়ে গেল গাজী ট্যাংকের বোলারদের। প্রচন্ড গরম আর কড়া রোদে যেটা ছিল শতভাগ ব্যাটিং উইকেট, সেটাই আগের রাতের বৃষ্টিতে হয়ে গেল বোলিং বান্ধব উইকেট।
পেসার আবু হায়দার রনি আর ভারতীয় অফস্পিনার আখতার রসুলের সাঁড়াশি বোলিং আক্রমণে বিদ্ধস্ত মুশফিক-মাশরাফির রূপগঞ্জ। ঠিক দুদিন আগে বিকেএসপির পাশের উইকেটে ৩০০ প্লাস রান করা দল বদলে যাওয়া উইকেটে মাত্র ১৫৬ রানেই অলআউট।
মাত্র ১২ রানেই সাজঘরে ফিরলেন তিন টপ অর্ডার এজাজ (১), হাসানুজ্জামান (৮) ও সায়েম (০)। একজন ব্যাটসম্যানও রান পাননি। আগের ম্যাচে মুশফিকুর ও নাঈম ইসলামের বড় জুটির কারণে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পাননি। প্যাড পরেই বসেছিলেন। সেই প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান লিমনের ব্যাট থেকে আসলো সর্বাধিক ৩০ রান।
ব্যাটসম্যান তকমাধারীদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন অধিনায়ক মুশফিক; কিন্তু লিজেন্ডস অফ রূপগঞ্জের সর্বাধিক স্কোরার ছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার মোশাররফ রুবেল (বলে ৩৭) আর মোহাম্মদ শরীফ (৩০ বলে ২৯)।
এ দুজন হাল না ধরলে রুপগঞ্জের রান আরও কম হতো। ৯২ রানে ৮ উইকেট পতনের পর মোশাররফ রুবেল ও শরীফ হাল ধরেন। তারা দুজন ৫৭ রান জুড়ে দেয়ায় রূপগঞ্জের স্কোর দেড়শোর ঘরে পৌঁছায়।
পরের সেশনেই উইকেটের চরিত্র গেলো পাল্টে। তার প্রমাণ, যে পিচে সকালে মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদুল হাসান লিমন স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেননি, দুপুর গড়াতে সে পিচেই মাথা তুলে দাঁড়ালেন মোশাররফ রুবেল-মোহাম্মদ শরীফ।
দুপুর গড়িয়ে সে পিচ একদম সহজ হয়ে যায়। তার প্রমান গাজী ট্যাংক ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি, এনামুল হক বিজয় আর মমিনুল হক- মধ্যাহ্ন বিরতির পর স্বচ্ছন্দে ও অনায়াসে ব্যাট করেন।
রুপগঞ্জ বোলাররা পাত্তাই পাননি। জহুরুল ইসলাম অমি একপ্রান্ত আগলে রাখেন। প্রথম উইকেটে জহুরুল আর এনামুল হক বিজয় ৫৯ রানের জুটি গড়ার পর বিজয় (৪৫ বলে ৩২) আউট হলে জহুরুল আর মমিনুল দ্বিতীয় উইকেটে আরও ৭৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুললে জয়ের খুব কাছে চলে যায় গাজী ট্যাংক।
জহুরুল অমি ১০৬ বলে ৬২ রানে আউট হওয়ার পর মমিনুল (৫৩ বলে ৪৪) আর নাসির (১২ বলে ১৫) অবিচ্ছিন্ন থাকলে মাত্র দুই উইকেট খুইয়ে ১১ ওভার আগেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় গাজী ট্যাংক।