আরব আমিরাতে ওয়ালটনের ৭ শোরুম উদ্বোধন

আরব আমিরাতে ওয়ালটনের ৭ শোরুম উদ্বোধন

ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ওয়ালটন। দুবাইকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ায় পণ্য সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। সেইসঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অভ্যন্তরীণ বাজারেও নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করার লক্ষে দুবাইসহ সাতটি স্টেটে উদ্বোধন করা হয়েছে ওয়ালটনের সাত টি শোরুম। নেওয়া হয়েছে বিশাল ওয়্যারহাউস (গুদামঘর)।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ালটন এ কথা জানিয়েছে।

সম্প্রতি আরব আমিরাতের দুবাই, আল আইন, আবুধাবি, শারজাহ, রাস আল খিয়ামসহ সাতটি স্টেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ওয়ালটনের সাতটি বিক্রয় ও মজুদ কেন্দ্র। এসব বিক্রয়কেন্দ্র বা শোরুম থেকে ওয়ালটনের ফ্রিজ, টিভি, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন সেট, স্টিম আয়রন ইত্যাদি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর আগে আরব আমিরাতে ওয়ালটনের তিনটি শোরুম ছিল। এখন সবমিলিয়ে সেদেশে ওয়ালটনের ১০টি শোরুম হলো। দেশটিতে ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষাপটে সেখানে নতুন শোরুমগুলো চালু হলো।

উল্লেখ্য, আগামী মাসের শেষের দিকে ওয়ালটনের নতুন ফ্রিজ ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে। সেখানে উৎপাদিত বার্ষিক ছয় লাখ ফ্রিজের বেশির ভাগই তৈরি হবে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য। আর তাই বহির্বিশ্বের বাজারে নিজেদের পণ্যের আলাদা চাহিদা ও বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করছে বাংলাদেশের এই শীর্ষ ব্র্যান্ড। মধ্যপ্রাচ্য ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।

আরব আমিরাতে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির বাস। সেখানে ওয়ালটন ব্র্যান্ড খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া দেশাত্মবোধে উজ্জীবিত হয়ে প্রত্যেক বাংলাদেশিই সেখানে ওয়ালটনের অলিখিত ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করেন। ফলে সেখানে ওয়ালটনসহ বাংলাদেশি পণ্য প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে ওয়ালটন নতুন করে সাতটি শোরুম উদ্বোধন করা হলো। এছাড়া শারজাহর ফ্রি জোনে নেওয়া হয়েছে বিশাল ওয়্যারহাউস। দুবাইয়ের জেবেল আলী বন্দরের ফ্রি জোনে আরেকটি ওয়্যারহাউস নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

দুবাই যেমন সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্যের হাব বা কেন্দ্র হতে চলেছে, তেমনি ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বাজারের হাব করা হচ্ছে মরু রানি দুবাইকে। দুবাই থেকে আফগানিস্তান, সৌদি আরব ও ইরানে ওয়ালটন পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। সেখান থেকে আইভরিকোস্ট, ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া, মালি, রাশিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, ইউক্রেন ইত্যাদি দেশেও  ওয়ালটন পণ্য রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে।

দুবাইয়ে ওয়ালটনের প্রধান ডিস্ট্রিবিউটর মো. মকবুল ট্রেডিং এলএলসি। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং পার্টনার মাহমুদ মামুন বলেন, ‘বিজনেস হাব দুবাই থেকে সারা বিশ্বের যে কোন প্রান্তে ওয়ালটন পণ্য সরবরাহ করা যাবে। সেরকম প্রস্তুতিই নিচ্ছি আমরা। দুবাইয়ের অভিজ্ঞতায় আমাদের মনে হয়েছে ওয়ালটন একদিন সারা বিশ্ব জয় করবে।’

ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং প্রধান লোকমান হোসেন আকাশ বলেন, ‘সর্বশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি ওয়ালটন পণ্য গুণগত দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের। উন্নত দেশগুলোতে গুণগতমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই রপ্তানি হচ্ছে আমাদের পণ্য। সেইসঙ্গে কম্পিটিটিভ প্রাইজ হওয়ায় আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে। বিভিন্ন দেশ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যেই ৫০টি দেশে আমরা পণ্য পৌঁছাতে পারব।’

ওয়ালটনের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর এবং ক্রিয়েটিভ ও পাবলিকেশন বিভাগের প্রধান উদয় হাকিম বলেন, ‘ইলেকট্রনিকস, ইলেকট্রিক্যাল ও অটোমোবাইল পণ্যে ওয়ালটন এখন একটি জায়ান্ট। ব্র্যান্ডটি ক্রমেই একটি সেনসেশনে পরিণত হচ্ছে। আমাদের লক্ষ ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত এই ব্র্যান্ডকে বিশ্বের শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত করা। এজন্য পণ্যের মান এবং বিক্রয়োত্তর সেবা এ দুটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি।’

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের ১১টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটনের পণ্য। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ওয়ালটন একটি জনপ্রিয় এবং অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে।

অর্থ বাণিজ্য