পরাজয়ের ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার পাঁয়তারা করছে : ওবায়দুল কাদের

পরাজয়ের ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার পাঁয়তারা করছে : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি পরাজয়ের ভয়ে ভীত হয়ে আগামী নির্বাচনে না যাওয়ার পাঁয়তারা করছে।
তিনি বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শতকরা ৯০ জন প্রার্থী জয়লাভ করেছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূলে কোন দলের কি অবস্থা তা পরিষ্কার হয়ে গেছে।’
কাদের আরো বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে ভীত হয়ে সৃষ্ট হতাশা থেকে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য নানা শর্তারোপ করা শুরু করেছে।’
ওবায়দুল কাদের বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়। বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকরা বৈঠকে তাদের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, একেএম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল-মাহমুদ স্বপন, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর ও শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা দলকে সুশৃঙ্খল ও আধুনিক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে চাই।
তিনি বলেন, ‘আশা করি বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে এবং এ নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। সকলের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে এ নির্বাচন সকলের কাছ গ্রহণযোগ্য হবে।’
বিএনপি আগামী নির্বাচনে পরাজয়ের ভয় থেকে নানা শর্তারোপ করা শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন। আর বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন নির্বাচন কমিশনে আমাদের কোন কমিশনার ছিল না। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশনে তাদের একজন কশিমনার রয়েছে।
বিএনপির নির্বাচন কালীন সহায়ক সরকারের দাবির জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার চায়। এধরনের কোন সরকারের বিষয় সংবিধানে নেই। সংবিধানে রয়েছে নির্বাচনকালীন সরকার।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে এবং নির্বাচনকালীন সরকার সরকারের দৈনন্দিন কাযক্রম পরিচালনা করবে। এ সরকার কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীকে তলব করতে পারে। তবে তারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দলে কিছু সমস্যা রয়েছে। এ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের ঢাকায় ডাকা হয়েছে। আগামী ২২, ২৪, ২৭ ও ২৯ এপ্রিল তাদের সাথে বৈঠক করা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জেলা, উপজেলা ও স্থানীয় পর্যায়ে যে সকল বিরোধ রয়েছে তা মীমাংসার জন্য এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
হাওর অঞ্চলের মানুষের জন্য সরকার কিছুই করেনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি ত্রাণ তৎপরতার জন্য সেখানে যাননি। তিনি সেখানে ফটোসেশন করে ধাপ্পাবাজি করার জন্য গেছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ হাওর অঞ্চলে দীর্ঘ তিনদিন দুর্গত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। ত্রাণ ও দুযোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এখনো হাওর অঞ্চলে অবস্থান করছেন।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল হাওর অঞ্চলে যাচ্ছে। এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী। এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সভাপত্তিত্বে সম্পাদক মন্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ