বাংলাদেশ দলের এক দিনের ক্রিকেট সংস্করণের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দেশপ্রেম নিয়ে চরম শত্রুও দ্বিমত করবেন না। খেলার মাঠে যেমন দেশের জন্য জীবন দিয়ে লড়াই করেন তেমনি সুযোগ পেলেই মাঠের বাইরেও কম যান না তিনি। ক`দিন আগেই বৈশাখের ছুটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে। সেখানে গিয়ে নিজ চোখেই দেখলেন বাংলাদেশ আর্মির আত্মত্যাগ। সেখানেই উপলব্ধি করেছেন এক দিনের জন্যও যদি তাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান তা হবে তার জন্য গর্বের।
দুই হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে সাত বার। ছোট বড় মিলিয়ে ১৩ বার। তারপর খেলে যাচ্ছেন দেশের স্বার্থেই। কারণ একজন মাশরাফি যে দলের জন্য জাদুরকাঠি। তবে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে সঙ্গ না দিয়ে দেশের জন্য বাংলাদেশ আর্মির একজন সৈনিকের আত্মত্যাগ দেখে নিজেকে তুচ্ছই মনে করছেন মাশরাফি।
নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে লিখলেন নিজের কথা, প্রথমে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আপনাদের সবাইকে যারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য সেবা করে যাচ্ছেন। আমার এবারের খাগড়াছড়ি সেনানিবাস ভ্রমণ থেকে আমি বুঝতে পেরেছি একজন সৈনিক তাঁর মাতৃভূমির জন্য কি পরিমাণ আত্মত্যাগ করেন। আপনারা হলেন সেই সব মানুষ যারা দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে, কিন্তু আপনাদের বীরত্ব গাঁথা হয়ত কখনো কোন জাতীয় দৈনিক বা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। আমার সাথে এমন একজন সৈনিক এর দেখা হয়েছে যিনি খুব শীগ্রই বাবা হবেন। অথচ দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি আজ তাঁর পরিবার থেকে বহুদূরের এই সেনা ক্যাম্প এ অবস্থান করছেন। আমি স্বীকার করি অনেকের কাছেই সেপাই পলাশ এর দেশের প্রতি অঙ্গীকার একটি সামান্য পরিসংখ্যান ছাড়া আর কিছুই নয়। নিজের কাজ দিয়ে জাতীয় সঙ্গীত কে সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা কিংবা গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দলকে সমর্থন দেয়াকেই আমরা হয়ত দেশাত্মবোধের পরিচায়ক হিসেবে মনে করি। কিন্তু মনে রাখবেন, এর কোনকিছুই আপনাদের আত্মত্যাগের সতূল্য নয়। আজ বাংলাদেশ আর্মির এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রত্যেক সদস্য দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত আছেন। আমার এই ভেবে খুব কষ্ট হয় যে আপনারা এবং আপনাদের আপনজনেরা অত্যন্ত কষ্ট সহ্য করেন যেন আমরা নিরাপদে ঘুম থেকে উঠতে পারি। যেদিন আমাদের দেশের সকল নাগরিক একই ভাবে দেশের জন্য আত্মনিয়োগ করতে প্রস্তুত হবে সেদিন আমরা পাবো সমৃদ্ধির বাংলাদেশ। মনে রাখবেন, “সমরে আমরা শান্তিতে আমরা সর্বত্র আমরা দেশের তরে”। সর্বশেষ এই বলতে চাই, “ যদি কখনো বাংলাদেশ আর্মির সাথে একদিনও কাজ করার সু্যোগ পাই, আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।” এত সময় ধরে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাদের কে অশেষ ধন্যবাদ। – আপনাদের মাশরাফি (একজন ব্যক্তি যে শুধুমাত্র ক্রিকেট খেলে)