দিনাজপুরের খানসামায় একটি পুকুরে ডিজেলের গন্ধযুক্ত খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে। উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নিকটবর্তী টংগুয়া গ্রামের বানিয়াপাড়ার হবিবর রহমানের পুকুরে এ তেল দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিষয়টি জানার পর সেটি দেখতে প্রতিদিন আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের শত শত লোক ছুটে আসছে এবং তেলের খনি সন্ধানের খবরটি চারদিক ছড়িয়ে পড়েছে।
পুকুরের মালিক হবিবর রহমান জানান, গত ১৫ দিন আগে পার্শ্ববর্তী পাড়ার এক নারী পুকুরে গোসল করে পুকুরের পূর্বপাড়ে ভেজা কাপড় শুকাতে গেলে তেলের গন্ধ পান। পরে চারপাশ খুঁজে ওই স্থান দিয়ে তেল জাতীয় দ্রব্য চুয়ে পড়তে দেখে বিষয়টি তাদেরকে বলেন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, এটি শোনার পর তিনি নিজেও বিষয়টি দেখতে এসে ডিজেল জাতীয় তেলের গন্ধ পান এবং ওই পানি হাতে নিয়ে নাকের কাছে নিতেই বিষয়টি নিশ্চিত হন।
তিনি আরও জানান, গত দুই বছর আগে তাকে পাশ্ববর্তী এলাকার কামরুজ্জামান নামে এক ব্যাক্তি তেলের কথাটি বলেন। কিন্তু তিনি এতে গুরুত্ব দেননি। পুকুরটি ২৫ বছর আগে ৩৩ শতক জমিতে খনন করা হয়। তবে খননকালে তিনি কোনো প্রকার তেলের আলামত পাননি বলেও জানান।
পুকুরে তেল দেখতে আসা প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম, সামসুল হক, সিহাব উদ্দিন মুকুল, নাজুমদ্দিন, পার্শ্ববর্তী এলাকার শাহানুর রহমান, ভেড়ভেড়ী গ্রামের নুরুল আলম, সরহদ্দ গ্রামের প্রিয়নাথ জানান, তেলের খনির বিষয়টি লোকমুখে শুনে স্ব-চোখে দেখতে এসেছেন। তারাও পুকুরের পানিতে তেল ভাসতে দেখেছেন এবং ওই স্থানের পানি ও কাঁদামাটি হাতে নিয়ে শুঁকে আসল ডিজেল তেলের গন্ধ অনুভব করেন।
এ ব্যাপারে ভেড়ভেড়ী ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, পুকুরে ডিজেল তেলের খনি বের হওয়ার খবরটি শুনেছি। তবে এগুলো প্রকৃত তেল কি না বিশেষজ্ঞের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
দিনাজপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মীর আব্দুল হান্নান নামে এক খনি বিশেষজ্ঞ জানান, ভূ-অভ্যন্তরে এরকম তেল জাতীয় পদার্থের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না।
এদিকে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিবুর রহমান মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের তিনি জানান, তিনি সেখান থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই নমুনা ঢাকায় বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হবে।