প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের যৌথ পানিসম্পদগুলোকে একক শক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে হবে। এসব নদীর পানিবণ্টনে ব্যাপক পরিকল্পনার মধ্যেই আমাদের যৌথ ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল।
সোমবার সফরের শেষ দিন ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনার এই সফর ঘিরে শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল তিস্তা চুক্তির বিষয়টি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে শেখ হাসিনার দু’দফা দেখা হওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি আরও বেশি আলোচনায় উঠে আসে। তবে শেষ পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি সম্পাদিত হয়নি।
তবে হাসিনা-মোদি শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২২টি চুক্তি-সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময়ের তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। তবে মমতা ব্যানার্জির আপত্তিতে তখন তা আটকে যায়।
এরপর তিস্তা চুক্তি আলোর মুখ না দেখলেও শিগগিরই এর একটি সুরাহা হওয়ার আশা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের কেন্দ্র সরকার অবশ্য চাইলে রাজ্য সরকারকে পাশ কাটিয়েই যেকোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে পারে। তবে তিস্তা চুক্তি এভাবে আলোর মুখ দেখলে তা টেকসই হবে না বলে মনে করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিস্তা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও একবার তা দ্রুত সমাধানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ সরকার বিশ্বাস করে, তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টির সমাধান হলে ইন্দো-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন রুপান্তর ঘটবে।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশকে মানুষকে মন-প্রাণ দিয়ে সমর্থন করেছে।
৭ বছর পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারত সফরে রয়েছেন শেখ হাসিনা। শুক্রবার দুপুরে ভারত পৌঁছান তিনি। আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় বিমান বাংলাদেশের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
সফরের তৃতীয় দিনে রাইসিনা হিলে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির। সাক্ষাতের পর শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। রাষ্ট্রপতি ভবনের অশোকা হলে ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে ভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে নৈশভোজে অংশ নেন তিনি।
তার আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে নয়াদিল্লিতে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন দেশটির প্রধানবিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, তার ছেলে ও কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী এবং দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। সন্ধ্যার দিকে রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কংগ্রেস দলীয় এই নেতারা।
রাষ্ট্রপতি ও কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই-কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ অন্যান্য সফরসঙ্গীরা।
এর আগে সকালের দিকে আজমিরে খাজা মইনুদ্দিন হাসান চিশতির মাজার জিয়ারত করেন শেখ হাসিনা। সফরসঙ্গীদের নিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জয়পুরের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। হেলিকপ্টারে আজমির শরিফে পৌঁছান।
সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া