রংপুরে ট্রাকচালককে হত্যা করে চাল লুটের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম সুমন নামে এক ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে বদরগঞ্জ থানা পুলিশ। গত ২৬ মার্চ পটুয়াখালীর গলাচিপা থানাধীন চিংগুইয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতারের পর রোববার দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ তাকে হাজির করা হয়।
আদালতের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২৮ মার্চ বিকেলে পঞ্চগড়ের রুহিয়া বাজার থেকে ২০০ বস্তা চাল নিয়ে ঢাকার মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ট্রাক চালক পরেশ চন্দ্র। ট্রাকটি রাত সাড়ে ৮টার দিকে রংপুরের তারাগঞ্জ অতিক্রম করে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পটুয়াখালীর গলাচিপা এলাকার আবুল বাশার (৪০), একই এলকার চান্দু মৃধা (৩০) ও সোবহান শিকদারসহ (২৭) সংঘবদ্ধ ডাকাত দল তাদের খালি ট্রাক নিয়ে চাল ভর্তি ট্রাকটির গতিরোধ করে।
এক পর্যায়ে চালের ট্রাকটির চালক পরেশকে জোরপূর্বক তাদের ট্রাকে তুলে নিয়ে রংপুরের বদরগঞ্জের দিকে রওনা হয় ডাকাতদের একটি অংশ।অপর কয়েকজন চাল ভর্তি ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ডাকাতরা বদরগঞ্জের অদূরে পৌঁছোনোর পর পরেশকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ রাস্তায় ফেলে দিয়ে ট্রাক নিয়ে পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ভ্যানকে ধাক্কা দিলে ভ্যানচালক মনোরঞ্জনসহ আরোহী পলাশ চন্দ্র গুরত্বর আহত হন। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ট্রাক চালক আবুল বাশারসহ আরও দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এবং আহত মনোরঞ্জনসহ পলাশকে হাসপাতালে নিলে মনোরঞ্জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এদিকে চালকসহ ট্রাক লুটের ঘটনায় ওই রাতেই তারাগঞ্জ থানায় লুটের মামলা করেন ট্রাকের মালিক হারান চন্দ্র। এছাড়া ট্রাক চালক পরেশকে হত্যার ঘটনায় পরদিন ২৯ মার্চ বদরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখিত তিন জন ছাড়াও দুই মামলার অপর সাত আসামি হলেন- পটুয়াখালীর শহীদ, অহিদ, নজরুল ইসলাম সুমন, বরগুনার জসীম, খাগড়াছড়ির মানিক, রংপুরের শাহিন ও বাবুল হোসেন।
দীর্ঘদিন মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর গত বছরের ৩০ জুন অভিযুক্ত ১০ ডাকাতের মধ্যে আবুল বাশার, চান্দু মৃধা ও সোবহান শিকদারের উপস্থিতিতে হত্যা মামলায় ১০ ডাকাতের ফাঁসি ও ডাকাতির মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশের রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
এদের মধ্যে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর নজরুল ইসলাম সুমনকে ২৬ মার্চ গ্রেফতার করা হয়।