দাকোপে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

দাকোপে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

ভাঙন কবলিত খুলনার উপকূলীয় দাকোপ উপজলোর নদী-খাল থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন। উপজেলার দুই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে এই বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ হলেও উপজেলার চুনকুড়ী, ভদ্রা, ঢাকী নদী থেকে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করে চলেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বড় নদী বাদেও ওয়াপদা বাঁধের ভিতরের চরা, লাউডোব, চালনা, দাকোপসহ অন্যান্য ছোট নদীতে শ্যালো ড্রেজার বসিয়ে চলছে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন। এর ফলে কৈলাশগঞ্জ ও বানীশান্তা ইউনিয়নের সদ্য নির্মিত কেয়ারের পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকী ও চুনকুড়ী নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে চালনা, দাকোপের পোদ্দারগঞ্জ এবং বটবুনিয়া এলাকার নদীভাঙন দিন দিন বাড়ছে।

সূত্র জানায়, ভাঙন কবলিত দাকোপ উপজেলার নদী থেকে বালি উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ একাধিক বেসরকারি কোম্পানির জায়গা ভরাট করার জন্য দাকোপের বিভিন্ন নদী থেকে বালু উত্তোলনের কাজ করে চলেছেন ঠিকাদাররা। এই কোম্পানিগুলো অন্য এলাকা থেকে বালু সরবরাহ করতে বললেও ঠিকাদাররা অধিক লাভের আশায় অবৈধভাবে দাকোপের নদীগুলো থেকেই বালু উত্তোলন করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল হোসেন ও পৌর মেয়র বিশ্বাস সনৎ কুমার। এদের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন হওয়ায় সাধারণ মানুষ কোনো কথা বলতে সাহস পায় না।

তারা আরও বলেন, নদীভাঙন দাকোপ উপজেলার প্রধান সমস্যা এবং সে সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছেন অথচ এলাকার কিছু স্বার্থান্বেশী মানুষের কারণে নদীভাঙন আরও প্রসারিত হচ্ছে।

সূত্রে জানা যায় সরকারি পাকা রাস্তা নির্মাণ, ভবন নির্মাণের ফাউন্ডেশনের কাজ ও বাড়ি ভরাটের কাজ চলছে এ বালু দিয়ে। স্থানীয় বালু দিয়ে পাকা সড়কের কাজ না করার কথা থাকলেও অধিকাংশ ঠিকাদার সাধারণ বালু দিয়ে কম খরছে নির্মাণ করছে রাস্তা।

এ ব্যাপারে দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন বলেন, আমরা দাকোপের পোদ্দারগঞ্জ ছাড়া দাকোপের অন্য কোনো নদী থেকে বালু উত্তোলন করি না। তবে এই কাজ আমি নয়, আমার দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা করে। তবে দাকোপের নদী থেকে না।

পৌর মেয়র বিশ্বাস সনৎ কুমার বলেন, আমরা দূর থেকে বালু উত্তোলন করছি। দাকোপের নদী থেকে নয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় দাকোপ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এভাবে বালু উত্তোলন করা অন্যায়। আমি বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছি, কয়েকজনকে সাজাও দিয়েছি। নতুন করে কোথায় উত্তোলনের খবর পেলে আবারও অভিযান চালাবো এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবো।

জেলা সংবাদ