সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে প্রতিদিন ৬০ হাজার ট্যাক্সি অনেক রাত পর্যন্ত শহরে ঘুরে বেড়ায়। এই ট্যাক্সিগুলোর পার্কিংয়ের জন্য শহরে কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। তাই অন্যান্য বড় শহরের মত ফোন করে এসব ট্যাক্সি ডাকা সম্ভব হয় না। এছাড়া অধিকাংশ চালকই ট্রাফিক আইন মেনে চলেন না।
সৌদি আরবের ট্যাক্সি মালিকরা ট্যাক্সি ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন চালকের কাছ থেকে একশ ৩০ থেকে দেড়শ রিয়াল নিয়ে থাকেন। চালকদের তারা মাসিক বা দৈনিক কোনো পারিশ্রমিক তো দেন না। বরং ট্যাক্সির গ্যাস শেষ হলে বা কোনো যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে গেলে তা সারানোর খরচও চালককে বহন করতে হয়।
ট্যাক্সি ভাড়ার টাকা জোগানোর পর যা উপার্জন হয়, সেটা চালকের থেকে যায়। ফলে চালকরা সবসময় বাড়তি সময়ে অতিরিক্ত আয়ের চেষ্টা করেন। এতে করে প্রতিদিনই তারা দেরিতে গ্যারেজে ফেরেন। এর ফলে মধ্যরাত পর্যন্ত রিয়াদের রাস্তায় জটলা বেঁধে যানজট তৈরি হয়।
রিয়াদে ৫০ হাজার, জেদ্দার রাস্তায় ৩৫ হাজার, দাম্মাম ও অন্যান্য শহরেও বহু ট্যাক্সি সারাক্ষণই ঘুরে বেড়াই। এই ট্যাক্সিগুলো পার্কিংয়ের মতো কোনো নির্দিষ্ট জায়গা শহরগুলোতে নাই। রাস্তার যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে তারা যাত্রী উঠাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এতে করে গাড়ির জটলা বেঁধে যায়। এরকম পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ চালক আইন মানেন না। ফলে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে ট্যাক্সি চালকদের চাকুরির ব্যাপারে আলোচনা করে আসছে দেশটি। শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ১২ বছর আগ থেকে এ নিয়ে আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছে। তবে বেশ কয়েকবার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে গিয়ে ট্যাক্সি মালিকদের বিরোধিতার মুখে তা ভেস্তে গেছে।
সম্প্রতি ট্যাক্সি সিস্টেমকে আধুনিকায়নের দিকে নজর দিয়ে তাদের সংগঠিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই সিস্টেমে স্মার্ট ফোন অ্যাপসের সাহায্যে ট্যাক্সি কোম্পানিগুলো তাদের কাস্টমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। আশা করা যাচ্ছে এই পদ্ধতি চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাবে। নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি যাত্রীদের স্বস্তিও দেবে।
সব ট্যাক্সি এই পদ্ধতির আওতায় আসবে এবং তাদেরকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে। চালক ও যাত্রীর নাম নিবন্ধন করা থাকবে; চলার সময় একে অন্যের নাম ও নম্বর রাখবেন। এতে করে নিরাপত্তা সমস্যা অনেকটাই নিরসন হবে।
তবে রিয়াদ, জেদ্দাসহ অন্যান্য শহরে ট্যাক্সি পার্কিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় স্থান পেতে বেগ পেতে হবে পরিবহন কর্তৃপক্ষকে। অনেকটাই কষ্টকর হবে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান থেকে যাত্রীর কাছে পৌঁছানো। তবে সবাই আন্তরিক হলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব বলে সৌদি প্রশাসনের বিশ্বাস।