অটিজম এবং নিওরোডেভলোপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ ন্যাশনাল এডভাইজারি কমিটির চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলে অটিজম বিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)’র চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।
নয়াদিল্লীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় বিষয়ক হু’র আঞ্চলিক অফিস ২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শনিবার এ ঘোষণা দেয়।
জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থাটি বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের প্রাক্কালে হু’ চ্যাম্পিয়ন হিসাবে সায়মা ওয়াজেদের নাম ঘোষণা দিয়ে বলেছে, তিনি জাতীয় নীতিমালা ও কৌশল বিষয়ে প্রচারণার জন্য অঞ্চলের ১১টি সদস্য দেশের সাথে এডভোকেসিতে সহায়তা দেবেন। হু তাকে অটিজমের জন্য একজন শক্তিশালী প্রচারক হিসাবে মনোনীত করেছে।
হু’র আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম খেত্রপাল সিং বলেন, সায়মা ওয়াজেদ হোসেন তার নিজ দেশ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য এজেন্ডায় অটিজমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালান এবং অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার ও অন্যান্য মানসিক এবং নিউরোডেভলোপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস এ অঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আকর্ষণে সহায়তা করেন।
তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলোতে সচেতনতা সৃষ্টি এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হিসাবে তার সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অটিজমের জন্য একজন আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হিসাবে সায়মা ওয়াজেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।
ড. খেত্রপাল সিং আরো বলেন, প্রতি দশ হাজার লোকের মধ্যে ১৬০ জন অথবা প্রতি ৬২ জনের মধ্যে একজন অটিজম আক্রান্ত। তিনি বলেন, স্বল্প এবং মধ্যম আয়ের দেশসমূহে অটিজম শিশুরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পায় না। তাদের জীবন খুবই দুর্বিসহ। তাদের খুব অল্প সংখ্যকের বিয়ে হয়।
সায়মা ওয়াজেদ তার বিভিন্ন ভূমিকা এবং যোগ্যতায় এএসডি বিষয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তিনি ২০১১ সালে জুলাই মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অটিজম নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন এবং মেন্টাল হেলথ বিষয়ে হু’র গ্লোবাল এক্সপার্ট এডভাইজারি প্যানেলের একজন সদস্য হন।
পুতুল নামে পরিচিত সায়মা ওয়াজেদ হোসেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে এই ফাউন্ডেশন কাজ করে। এটি হু’র মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক হু’র এক্সপার্ট এডভাইজারি প্যানেলের সদস্য। তিনি ২০১১ সালে একটি আঞ্চলিক সম্মেলনের আয়োজন করে অবহেলিত এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসেন। এই সম্মেলনে ভারতের সে সময়ের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দলের প্রধান সোনিয়া গান্ধীসহ আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ যোগ দেন। তার এ প্রচেষ্টার ফলে নিওরোডেভলোপমেন্টাল ডিজএবলিটি প্রটেকশন ট্রাস্ট এ্যাক্ট ২০১৩ পাস হয়। তার দেয়া প্রস্তাবের আলোকে জাতিসংঘ কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করে।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে হু’র দেয়া পাবলিক হেলথ এ্যাওর্য়াড লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক কমিটি ও নেটওয়ার্কের নেতৃত্ব দেন।
তিনি টরেন্টোর অন্টোরিও ফিজিওলোজিকেল এসোসিয়েশন এবং অটিজম বিষয়ক এবং গ্লোবাল অটিজম বাংলাদেশ বিষয়ক এনডিডি’র একজন আন্তর্জাতিক পরার্মশক।
বাংলাদেশ, ভূটান, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও তিমুর হু’র দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অঞ্চলের সদস্য রাষ্ট্র।