বকেয়া বেতনের দাবিতে স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অস্থায়ী শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) মেয়র আহসান হাবিব কামাল।
আগামীকাল রোববারের (০২ এপ্রিল) মধ্যে কাজে যোগদানের জন্য আন্দোলনকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায় ধর্মঘট করা শ্রমিকদের বাদ দিয়ে নতুন শ্রমিক নিয়োগ এবং স্থায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেয়র কামাল।
শনিবার বিকেলে মেয়র কামাল কালুশাহ সড়কে তার বাসভভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে ধর্মঘট করা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে আন্দোলকারীরা বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, পুরো বকেয়া পরিশোধ হওয়ার আগ পর্যন্ত কাজে যোগ দেবেন না তারা।
এ সময় সাংবাদিক সম্মেলনে বিসিসির ৩৫ কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। এসব কাউন্সিলরা ঠিকাদারী বাণিজ্যে মেয়র কামালের কাছ থেকে নানাভাবে সুবিধাভোগী বলে অভিযোগ রয়েছে।
মেয়র দাবি করেন, বিসিসির কতিপয় কর্মকর্তা তার কাছ থেকে অনৈতিক পদোন্নতির সুবিধা না পেয়ে আন্দোলনের নামে নগর জীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন।
মেয়র কামাল বলেন, স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৫ মাসের বেতন এবং ৩২ মাসের প্রফিডেন্ড ফান্ডের টাকা বকেয়া পড়েছে। তার মধ্যে ৩ মাসের বেতন এবং ২২ মাসের প্রভিডেন্ড ফান্ড বকেয়া সাবেক মেয়রের সময়ে। অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন বকেয়া ২ মাসের।
রোববার তিনি নগর ভবনে গিয়ে তার সময়ের স্থায়ীদের ২ মাসের বেতন এবং অস্থায়ীদের ২ মাসের বেতন পরিশোধ করবেন। আগের মেয়রের সময়ের বকেয়ার দায়-দায়িত্ব তিনি নেবেন না। মেয়র কামাল ওই বেতন গ্রহণ করে কাজে যোগদানের জন্য আন্দোলনকারদের প্রতি আহ্বান জানান।
আন্দোলনকারীরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে কী করবেন জানতে চাওয়া হলে মেয়র কামাল বলেন, কাউন্সিলররা নিজ নিজ ওয়ার্ডে নতুন শ্রমিক নিয়োগ করে নগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবেন। স্থায়ীদের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হবে।
রোববার মেয়র নগর ভবনে গেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে কিনা জানতে চাওয়া হলে মেয়র বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ড ফান্ডের টাকা দাবিতে বিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অস্থায়ী শ্রমিকরা গত ২৭ মার্চ থেকে কর্মবিরতি ও লাগাতার বিক্ষোভ করে আসছে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, অনিয়ম-দুর্নীতিতে রাজস্ব আয়ের টাকা দিয়ে লুটপাট করে বিসিসিতে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি করা হয়েছে।