অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দুর্নীতি দমন করতে না পারলে মানবজাতির ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে পারে। তবে আশার কথা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ শুরু হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বুধবার দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহের চতুর্থ দিনে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ মহানগর, জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। রোববার থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৭ শুরু হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কমিশনের প্রচার-প্রচারণার অধিক্ষেত্র হচ্ছে অল্পবয়সী ছেলে-মেয়ে তথা তরুণ প্রজন্মের সদস্যদের নিয়ে। তাদের এই কৌশল আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি সত্যিই অভিভূত। কারণ, সৎ ও মূল্যবোধ সম্পন্ন জাতি গঠনের আসল সময় হলো শৈশব ও কৈশোর।
তিনি বলেন, যারা কৈশোর বা যৌবনের প্রারম্ভে সৎ পথে থাকেন পরবর্তী জীবনে তাদের পক্ষে অনৈতিক জীবন-যাপন করা সত্যিই কঠিন।
মুহিত বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের সোপানে নিয়ে গেছেন। বর্তমান সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেভাবে বেতন বৃদ্ধি করেছে, তাতে জীবিকা নির্বাহের জন্য দুর্র্নীতি করার প্রয়োজন নেই। আমার অনুরোধ, আপনারা দুর্নীতির পথ পরিহার করুন।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, সময় এসেছে রাজনীতিবিদ, সরকারি চাকরিজীবীসহ সকলকে শপথ নিতে হবে, ‘আমরা দুর্নীতি করবো না এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে যাব না’।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই এই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছে।
দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সনে দুদকের মামলার সাজার হার ছিল ৩৭ শতাংশ, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫৪ শতাংশ। কমিশন এই সাজার হার ১০০ শতাংশে উন্নীত করতে চায়। তাই কমিশন এর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। তিনি জানান, প্রায় ৮০৮ জন কর্মকর্তাকে বিগত বছর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
সিলেট, জামালপুর এবং নরসিংদী জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিকে শ্রেষ্ঠ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি এবং জুড়ী (মৌলভী বাজার), ছাতক (সুনামগঞ্জ), বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ), গফরগাঁও (ময়মনসিংহ), দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর), গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সাভার (ঢাকা), সোনারগাঁও (নারায়নগঞ্জ) ও রাজৈর (মাদারীপুর) উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিকে শ্রেষ্ঠ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়। এ সকল কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১২০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল, মহাপরিচালক ড. মো. শামসুল আরেফিন, সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম, সিলেট জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ব্রি. জে. (অব.) যোবায়ের সিদ্দিকী, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ড. খন্দকার এহসান এ্যাডভোকেট, জামালপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম সেলিম ও সাভার উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালাহ্উদ্দীন খান নইম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।