বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশ থেকে এইচআইভি/এইডস, যক্ষা ও ম্যালেরিয়া এই ৩টি প্রধান ব্যাধি নির্মূলে সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বুধবার সকালে গণভবনে সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডাঃ পুনম ক্ষেত্রপাল সিং এক সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ আশ্বাস দেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক পরিচালক বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশে তৃণমূল জনগণের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন একটি সফল কর্মসূচি। আমি যেখানে যাই উদাহরণ হিসেবে এই কর্মসূচির কথা বলি।
ডা: পুনম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে অন্যান্য দেশকে এই কর্মসূচি চালুর উৎসাহ দিচ্ছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, আগামী মাসে ভূটানে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
১৯ থেকে ২১ এপ্রিল ৩ দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করবে বাংলাদেশ, ভূটান ও ডব্লিউএইচও।
ডা. পুনম অটিজম বিষয়ে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশে ন্যাশনাল এডভাইজরি কাউন্সিল অব অটিজমের চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেইনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সায়মা ওয়াজেদের কারণে এই বিশ্ব সংস্থার কর্মসূচিতে অটিজম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির আঞ্চলিক পরিচালক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাসস্থানসহ জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনে তাঁর উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা কীভাবে নিশ্চিত করা হয় তা তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে শিখেছেন এবং গোটা দেশ সফর করে এ ব্যাপারে তিনি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সব অভিজ্ঞতা প্রয়োগ এবং দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করি। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ লাভ থেকে বঞ্চিত করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে তাঁর সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আবারও চালু করে। বর্তমানে ১৮ হাজার ৩৩৭টি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জনগণ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে।
দেশে আরও চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে তাঁর সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, চিকিৎসকদের উচ্চশিক্ষার জন্য চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার উপজেলা ও জেলা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। পল্লীর জনগণের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে টেলি-মেডিসিন ও মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে।
সায়মা ওয়াজেদ হোসাইন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।