কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।
রিটার্নিং অফিসার রকিবউদ্দিন মন্ডল বাসস’কে জানান, নির্দিষ্ট সময়ে নগরীর প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় এই সিটি কর্পোরেশন এলাকার সবকটি কেন্দ্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ধরে ভোট দিতে দেখা যায়।
কুমিল্লা সদরের বজ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোটরা মালেকা মমতাজ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সকালে ভোটগ্রহণের আগেই প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটাররা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অত্যন্ত সুশৃংখল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শতশত নর-নারী ভোট দিচ্ছেন। ভোটাররা কেন্দ্রে যাওয়ার পর ভোটার তালিকায় তাদের নাম পরীক্ষা করে ব্যালট পেপার দেয়া হচ্ছে। প্রত্যেক ভোটার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আলাদা আলাদা ব্যালটে ভোট দিচ্ছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে এখানে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সকাল সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের ১০৩টি কেন্দ্রের কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাসস’কে বলেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসতে পারে এজন্য নির্বাচন কমিশন সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এ নির্বাচনে ৪ জন মেয়র, ১০৪ জন কাউন্সিলর ও ৪০ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন ভোটার আজ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নগরীতে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।
এই সিটিতে দলীয় প্রতীকে এটি প্রথম নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে টানা ১৪ দিনের প্রচারণা শেষ হয়েছে। প্রচার-প্রচারণায় আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও সদ্য সাবেক মেয়র বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুসহ অন্য মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিরল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে এ পর্যন্ত বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায় এলাকার ভোটাররা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণে নির্বাচনী এলাকায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে এটিই প্রথম বড় কোন নির্বাচন হওয়ায় যে কোন মূল্যে সুষ্ঠু ভোটের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কমিশন সুত্র জানায়, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ১০৩টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটাররা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন সেজন্য ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। ১ হাজার ৬৭৬ জন পুলিশ সদস্য, ১ হাজার ২৩৬ জন আনসার, ৩২২ জন র্যাব ও ৪৮০ জন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ২৭ জন পর্যবেক্ষককে নিয়োগ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে সোমবার থেকেই পুরো নগরীজুড়ে পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে ২৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। র্যাব সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। এরা নির্বাচনের পরদিন ৩১ মার্চ পর্যন্ত মাঠে থাকবে বলে কমিশন জানায়।