সাহাবউদ্দিনের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন টেকনাফের দিদার বলী। কুমিল্লার অলি বলীকে হারিয়ে তিনি সেরা বলীর পুরস্কার জয় করেন।
শনিবার বিকেল সোয়া তিনটায় বন্দরনগরীর সিআরবি’র সাত রাস্তার মোড়ে এ বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা নবীন-প্রবীণ বলীরা এতে অংশ নেন। ৩ বছর ধরে পহেলা বৈশাখ এ বলী খেলা হয়ে আসছে।
এবারের বলীখেলার প্রথম পর্বে অংশ নেন উখিয়ার গরিবুল্লা, কুমিল্লার আলম ও স্বপন, বি.বাড়িয়ার হোসেন, বাঁশখালীর কাসেম, মানিক ও সিদ্দিক এবং মহেশখালীর বজল বলী প্রমুখ। চূড়ান্ত পর্বে গত বছরের চ্যাম্পিয়ন দিদার বলীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন কুমিল্লার অলি বলী।
চারটা ২৫ মিনিটে দুই বলী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। নিপুণ কলাকৌশল প্রয়োগ করেন শিরোপা প্রত্যাশী দুই বলী। এ সময় দর্শকরা হাততালি, দুয়োধ্বনি দিয়ে আর বাঁশি বাজিয়ে বলীদের উৎসাহ যোগান। পাশাপাশি ছিল বাদকদলের ছন্দময় বাদ্য।
দেড় মিনিটের মাথায় দিদার বলী শূন্যে তুলে আছাড় মারেন (বালিতে ফেলে দেন) অলি বলীকে। মুহূর্তেই বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন হাজারো দর্শক। দিদার বলীকে কোলে তুলে নাচতে থাকেন ভক্তরা। দর্শক বাড়িমুখো হন বলীদের নানা কৌশল, অঙ্গভঙ্গি আর লড়াইয়ের গল্প ফেরি করে।
খেলা পরিচালনা করেন কাউন্সিলর এমএ মালেক এবং আবদুল জব্বার কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী। সার্বিক তদারকি করেন এ বলীখেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন।
বলীখেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চের সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী।
অতিথিরা চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ বলীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যুবকদের প্রস্তুত করতে চট্টগ্রামে শত বছর আগে থেকে একধরনের কুস্তি প্রতিযোগিতা প্রচলন করেন জমিদার তথা বড় ব্যবসায়ীরা। ওই প্রতিযোগিতা স্থানীয়ভাবে বলীখেলা হিসেবে পরিচিত। লালদীঘির মাঠে প্রতি বছর ১২ বৈশাখ আবদুল জব্বারের বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২৫ এপ্রিল এ বলীখেলার ১০৩তম আসর বসবে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মক্কার’ বলীখেলা ও বোয়ালখালীর বেঙ্গুরায় পেশকারের বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়।