প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এখন এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেশবাসীর। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এ দেশের জনগণের স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সঙগ্রাম করেছেন। এখন এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেশবাসীর।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কেবল মাত্র আমারই পিতা নন, তিনি সমগ্র বাংলাদেশের পিতা এবং দেশের জনগণের পিতা। বঙ্গবন্ধু সবকিছু জনগণের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন”। তিনি বলেন, ‘এই বাড়ি থেকে শুরু করে সবকিছু জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছি। বাকী শুধু একটাই এই দেশটাকে যদি সেভাবে গড়ে দিয়ে যেতে পারি। আমি আশা করি এই বইয়ের মধ্যদিয়ে আপনারা আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন। দেশকে জানতে পারবেন, মানুষগুলিকে জানতে পারবেন।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ৩৩২ পৃষ্ঠার এই বইতে বঙ্গবন্ধুর ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত কারাগারে অন্তরীণ থাকার সময়কার দৈনন্দিন ডায়েরি আকারে লেখনী স্থান পেয়েছে। এমিরেটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ অনোয়ার হোসেন এবং অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বইটির ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জাসান নূর বইটির কিয়দংশ অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান এবং বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ডায়াজে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা,বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মিডিয়ার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময়ই রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা আবৃত্তি করতেন ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই। নি:শেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তাঁর ক্ষয় নাই।’ উদাত্ত কন্ঠে তিনি এই উচ্চারণটা সবসময় করতেন। আজকে এটাই তাঁর জীবনে বাস্তব হলো-নি:শেষে প্রাণটা তিনি দিয়ে গেলেন কিন্তু তাঁকে যারা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল,পারল না। তিনি সেই ইতিহাসে আবারো ফিরো এসেছেন এবং এই বাংলার মাটিতে আবার ফিরে এসেছেন। আর আমার একটাই কাজ তাঁর বাংলাদেশকে সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি বলেন, আরেকটা কাজ আমি করেছি-যে এখানে অনেকের কথা তিনি (বঙ্গবন্ধু) লিখেছেন। অনেক ভালো ভালো কথা লিখেছেন, কিন্তুু এরমধ্যে অনেকেইতো পরে বেঈমানী করে চলে গেছে। কিন্তু যার সম্পর্কে তিনি যা লিখেছেন সে লেখায় আমি কোন হাত দেইনি। একটি কথাও কাটিনি ঠিক সেইভাবেই আছে। এরমধ্যেই অনেকেই বেঁচে নেই আবার অনেকেই বেঁচে আছেন যাই হোক এখন এগুলো পড়লে তারাই লজ্জা পাবে কিনা আমি জানি না। কিন্তুু তিনি যাকে যেভাবে দেখেছেন,বর্ননা দিয়েছেন, যেভাবে ভালকথা লিখেছেন সব হুবহু ঐভাবেই রেখে দিয়েছি। কারণ সকল মানুষের সত্য কথাটা জানা উচিত। আর এত সাহস আমার নেই যে তার লেখায় হাত দেব। কাজেই তিনি যেভাবে লিখেছেন সেভাবেই আমরা তা রাখার চেষ্টা করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, যখন একটু কাজ করি যখনই একটু ভালো কাজ হয়-তখন কেবল এটুকুই মনে হয় আমার আব্বা আজ বেঁচে নেই, উনি বেঁচে থাকলে বোধহয় আরো অনেক মানুষ উন্নত জীবন পেত। কিন্তু আজকে তিনি বেঁচে নাই যদি একটু ভালো কাজ করি তাঁর আত্মাটা শান্তি পাবে, তিনি নিশ্চয়ই দেখেন। তিনি নিশ্চয়ই জানেন। তিনি নিশ্চয়ই এটা উপলদ্ধি করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লেখার মধ্যদিয়ে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন। তবে, এখানেই শেষ নয় তাঁর লেখা আরো আছে। সেগুলোও আমরা ধীরে ধীরে প্রকাশ করবো। সেগুলোও মোটামুটি প্রস্তুুত। ২০২০ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের পূর্বেই আমরা এই লেখাগুলো প্রকাশ করবো। সেইসাথে বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালে পুলিশের এসবি’র (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) যে রিপোর্ট,বহু নেতাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট, আমি অনেকের রিপোর্ট নিয়ে এসে দেখেছি। কিন্তু আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, একজন মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে ৪৮ থানার মত ফাইল,৩০/৪০ হাজার পাতা । কিন্তু বিরুদ্ধে লেখা হলেও এরমধ্য দিয়ে একদিকে যেমন তাঁর জীবনীটা পাওয়া যায় তেমনি বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের তথ্যও জানা যায়। সেটাও আমরা তৈরী করেছি। সেটারও কাজ চলছে। সেটা ডিক্লাসিফাইড করে দিয়েছি। এটাকে আগে আমরা একটি ডকুমেন্ট হিসেবে ছাপাবো ও বের করবো। সেখানে মূল কথাগুলো যেন থাকে তাঁর প্রতি লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐ বইয়ে কিভাবে বঙ্গবন্ধু কাজ করেছেন, কিভাবে রাজনৈতিক দলটা তিনি গড়ে তুলেছেন, কিভাবে সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন-সবকিছুই সেখানে সুন্দরভাবে লেখা আছে। শীগ্রই সেটা আমরা প্রকাশ করবো। সেইসাথে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে একশ অভিযোগ আনা হয় এবং সেখান থেকে দুটি অভিযোগ দিয়ে মামলা করা হয়। সে ডকুমেন্টও আমরা প্রকাশ করবো। বাংলাদেশের ইতিহাস যারা জানতে চাইবে তারা হয়তো এই ডকুমেন্টগুলো পড়লেই জানতে পারবে। তিনি বলেন, আজকে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে যখন কোন কাজ করতে যাই-তখন দেখি তিনি (বঙ্গবন্ধু) প্রতিটি ক্ষেত্রে সবকিছুইতো কতে দিয়ে গেছেন- একটি স্বাধীন দেশই শুধু দিয়ে যাননি একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে সকল প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে দিয়ে গেছেন। আইনগুলো করে দিয়ে গেছেন, শুধু বাস্তবায়ন করা, একে একে আমরা সাধ্যমতো তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে শেখ রেহানার উপস্থিত হতে না পারা প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা জানেন রেহানা আসতে পারেনি কারণ কয়েক দিন আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সন্ত্রাসি হামলার প্রেক্ষিতে তাঁর মেয়ে সেখানকার এমপি হওয়ায় তাঁর ছোট শিশুটিকে নিয়ে আটকা পড়ে যায়। রেহানা দেশেই ছিল ঐ খবর পাওয়ার পরদিন সকালেই সাথে সাথে সেখানে চলে যায়। এই অনুষ্ঠানে তাঁরও (রেহানার) থাকার কথা ছিল। এখানে আসার আগে আমি টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলে এসেছি কারণ ও সবসময় আমার পাশে থাকুক সেটাই সবসময় চেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর এই প্রকাশনার কাজে সহায়তাকারি প্রায় সবাইকেই একে একে হারিয়ে ফেলেছেন বলে আক্ষেপ করে বলেন, ড.এনায়েতুর রহিম সাহেব জর্জটর ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ছিলেন, মূল কাজটি প্রথমে তাঁকে নিয়ে শুরু করি। তিনি মারা গেলেন। এরপর তত্বাবধায়ক সরকারের সময় ্েরগ্রফতার হয়ে জেলে থাকার সময় শুনতে পেলেন আরেক গবেষক ও অনুবাদকের দায়িত্ব নেয়া প্রফেসর শামসুল হুদা হারুন, একে একে তাঁ ঘনিষ্ট সহযোগী ও বান্ধবী বেবী মওদুদ এবং মাহবুবুল হক শাকিল চলে গেলেন। শুধু শামসুজ্জামান সাহেব, শামসুজ্জামান ভাই শুরু থেকেই আমাদের সঙ্গে আছেন- সেই ২০০৪ সাল থেকে। তিনি সবসময় সাহায্য করেছেন। উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে মনে হয় যেন এভাবে সকলকে কেন হারাচ্ছি জানি না। যাহোক অবশেষে বইটা আমরা বের করতে পেরেছি। আর আপনাদের হাতে, জনগণের হাতে দিতে পেরেছি। জাতির পিতার সপরিবারে হত্যার পর ৬ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরলেও তাঁকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে ঢুকতে দেয়া হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরে যখন তিনি ঢোকেন তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর আমার কেবলই মনে হচ্ছিল মায়ের কাছে রাখা ঐ খামগুলো কিভাবে উদ্ধার করা যায়। তিনি বলেন, ঐ সময় বাড়ি থেকে বঙ্গবন্ধুর লেখা খাতা কয়টাই নিয়ে আসেন। আর কিছুই তিনি আনেন নি। তিনি বলেন,চারিদিকে রক্তের ছোপ, ছোট সেই অবস্থার মধ্যে আমাকে খুঁজে দেখতে হয়েছে। ধুলাবালি আর মাকড়সার জালের মধ্যদিয়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি খাতা আছে ১৯৬৮ সালের। ঐটি ওনার শেষ লেখা। ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু কে গ্রেফতার করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী এবং তাঁরপর আগরতলা মামলা হয় এবং ৫ মাস পর মামলা শুরু হওয়ার পরে খাতাটা তাঁর হাতে দেয়া হয়েছিল। সেখানে খুব অল্পই লেখা থাকলেও ঐ লেখাটা নিয়ে এটি স্মৃতি রয়ে গেছে যে স্মৃতিটা আমি আজকে আপনাদের বলবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানুয়ারি মাসের পর থেকে জানতাম না উনি কোথায় আছেন, কিভাবে আছেন, বেঁছে আছেন কি না। কোন খবর আমরা জানতে পারি নি। যখন মামলা শুরু হলো সেই কোর্টও ছিল ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তখনই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম দেখা হলো। এরপর আমরা মাঝে মাঝে সাক্ষাৎকারের অনুমতি পেতাম। বঙ্গবন্ধুকে অফিসার্স মেসের একটি কক্ষের্ াখা হতো। সেটাকে এখন একটি মিউজিয়ামের মত করে রাখা হয়েছে। আমাদের সেনাকবাহিনী জায়গাটি মিউজিয়ামের মত করে রেখেছে। আপনারাও ইচ্ছে করলেই সেটা দেখতে যেতে পারেন। সেখানে খাটের পাশে দুটো চেয়ার ছিল। আমরা যথন যেতাম হঠাৎ দেখি বালিশের নিচে একটা খাতা। আমার কি মনে হলো আমি আস্তে খাতাটা বের করে পড়তে শুরু করলাম। তখন আব্বা-আম্মা পাশাপাশি চেয়ারে বসে। আব্বা তখন বিষয়টি লক্ষ্য করলেন। উনি উঠে এলেন। আস্তে আমাকে জড়িয়ে ধরে কোন বকাও দিলেন না কিছুই বললেন না। শুধু হাত থেকে খাতাটা নিয়ে নিলেন। নিয়ে শুধু এইটুকুই বললেন-এখন পড়বি না। আমার মৃত্যুর পরে পড়বি। আমার হাত থেকে তিনি খাতাটা নিয়ে রেখে দিলেন। শেখ হাসিনা বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘একটি মানুষ আজন্ম সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছেন। জীবনে টানা দুটি বছরও বাবাকে একটানা কাছে পাই নি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্টের পরে যখন ঐ খাতাগুলো হাতে পেলাম সত্যকথা বলতে কি এগুলো পড়া আামার জন্য খুব কষ্টের ছিলো। আমার বান্ধবী ছিলো বেবী। ও সবসময় পাশে থাকতো, সাহায্য করতো। কিন্তু খাতাগুলো আমি যে পড়বো, কেন যে সেই সাহসটাই পেতাম না। বার বার বাবার সেই কথাটাই মনে পড়তো। তাই এই বইটি যে আজকে মানুষের হাতে তুলে দিতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এখন এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেশবাসীর। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এ দেশের জনগণের স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সঙগ্রাম করেছেন। এখন এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেশবাসীর।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কেবল মাত্র আমারই পিতা নন, তিনি সমগ্র বাংলাদেশের পিতা এবং দেশের জনগণের পিতা। বঙ্গবন্ধু সবকিছু জনগণের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন”। তিনি বলেন, ‘এই বাড়ি থেকে শুরু করে সবকিছু জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছি। বাকী শুধু একটাই এই দেশটাকে যদি সেভাবে গড়ে দিয়ে যেতে পারি। আমি আশা করি এই বইয়ের মধ্যদিয়ে আপনারা আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন। দেশকে জানতে পারবেন, মানুষগুলিকে জানতে পারবেন।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ৩৩২ পৃষ্ঠার এই বইতে বঙ্গবন্ধুর ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত কারাগারে অন্তরীণ থাকার সময়কার দৈনন্দিন ডায়েরি আকারে লেখনী স্থান পেয়েছে। এমিরেটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ অনোয়ার হোসেন এবং অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বইটির ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জাসান নূর বইটির কিয়দংশ অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান এবং বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ডায়াজে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা,বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মিডিয়ার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময়ই রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা আবৃত্তি করতেন ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই। নি:শেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তাঁর ক্ষয় নাই।’ উদাত্ত কন্ঠে তিনি এই উচ্চারণটা সবসময় করতেন। আজকে এটাই তাঁর জীবনে বাস্তব হলো-নি:শেষে প্রাণটা তিনি দিয়ে গেলেন কিন্তু তাঁকে যারা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল,পারল না। তিনি সেই ইতিহাসে আবারো ফিরো এসেছেন এবং এই বাংলার মাটিতে আবার ফিরে এসেছেন। আর আমার একটাই কাজ তাঁর বাংলাদেশকে সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি বলেন, আরেকটা কাজ আমি করেছি-যে এখানে অনেকের কথা তিনি (বঙ্গবন্ধু) লিখেছেন। অনেক ভালো ভালো কথা লিখেছেন, কিন্তুু এরমধ্যে অনেকেইতো পরে বেঈমানী করে চলে গেছে। কিন্তু যার সম্পর্কে তিনি যা লিখেছেন সে লেখায় আমি কোন হাত দেইনি। একটি কথাও কাটিনি ঠিক সেইভাবেই আছে। এরমধ্যেই অনেকেই বেঁচে নেই আবার অনেকেই বেঁচে আছেন যাই হোক এখন এগুলো পড়লে তারাই লজ্জা পাবে কিনা আমি জানি না। কিন্তুু তিনি যাকে যেভাবে দেখেছেন,বর্ননা দিয়েছেন, যেভাবে ভালকথা লিখেছেন সব হুবহু ঐভাবেই রেখে দিয়েছি। কারণ সকল মানুষের সত্য কথাটা জানা উচিত। আর এত সাহস আমার নেই যে তার লেখায় হাত দেব। কাজেই তিনি যেভাবে লিখেছেন সেভাবেই আমরা তা রাখার চেষ্টা করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, যখন একটু কাজ করি যখনই একটু ভালো কাজ হয়-তখন কেবল এটুকুই মনে হয় আমার আব্বা আজ বেঁচে নেই, উনি বেঁচে থাকলে বোধহয় আরো অনেক মানুষ উন্নত জীবন পেত। কিন্তু আজকে তিনি বেঁচে নাই যদি একটু ভালো কাজ করি তাঁর আত্মাটা শান্তি পাবে, তিনি নিশ্চয়ই দেখেন। তিনি নিশ্চয়ই জানেন। তিনি নিশ্চয়ই এটা উপলদ্ধি করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লেখার মধ্যদিয়ে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন। তবে, এখানেই শেষ নয় তাঁর লেখা আরো আছে। সেগুলোও আমরা ধীরে ধীরে প্রকাশ করবো। সেগুলোও মোটামুটি প্রস্তুুত। ২০২০ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের পূর্বেই আমরা এই লেখাগুলো প্রকাশ করবো। সেইসাথে বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালে পুলিশের এসবি’র (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) যে রিপোর্ট,বহু নেতাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট, আমি অনেকের রিপোর্ট নিয়ে এসে দেখেছি। কিন্তু আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, একজন মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে ৪৮ থানার মত ফাইল,৩০/৪০ হাজার পাতা । কিন্তু বিরুদ্ধে লেখা হলেও এরমধ্য দিয়ে একদিকে যেমন তাঁর জীবনীটা পাওয়া যায় তেমনি বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের তথ্যও জানা যায়। সেটাও আমরা তৈরী করেছি। সেটারও কাজ চলছে। সেটা ডিক্লাসিফাইড করে দিয়েছি। এটাকে আগে আমরা একটি ডকুমেন্ট হিসেবে ছাপাবো ও বের করবো। সেখানে মূল কথাগুলো যেন থাকে তাঁর প্রতি লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐ বইয়ে কিভাবে বঙ্গবন্ধু কাজ করেছেন, কিভাবে রাজনৈতিক দলটা তিনি গড়ে তুলেছেন, কিভাবে সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন-সবকিছুই সেখানে সুন্দরভাবে লেখা আছে। শীগ্রই সেটা আমরা প্রকাশ করবো। সেইসাথে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে একশ অভিযোগ আনা হয় এবং সেখান থেকে দুটি অভিযোগ দিয়ে মামলা করা হয়। সে ডকুমেন্টও আমরা প্রকাশ করবো। বাংলাদেশের ইতিহাস যারা জানতে চাইবে তারা হয়তো এই ডকুমেন্টগুলো পড়লেই জানতে পারবে। তিনি বলেন, আজকে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে যখন কোন কাজ করতে যাই-তখন দেখি তিনি (বঙ্গবন্ধু) প্রতিটি ক্ষেত্রে সবকিছুইতো কতে দিয়ে গেছেন- একটি স্বাধীন দেশই শুধু দিয়ে যাননি একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে সকল প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে দিয়ে গেছেন। আইনগুলো করে দিয়ে গেছেন, শুধু বাস্তবায়ন করা, একে একে আমরা সাধ্যমতো তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে শেখ রেহানার উপস্থিত হতে না পারা প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা জানেন রেহানা আসতে পারেনি কারণ কয়েক দিন আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সন্ত্রাসি হামলার প্রেক্ষিতে তাঁর মেয়ে সেখানকার এমপি হওয়ায় তাঁর ছোট শিশুটিকে নিয়ে আটকা পড়ে যায়। রেহানা দেশেই ছিল ঐ খবর পাওয়ার পরদিন সকালেই সাথে সাথে সেখানে চলে যায়। এই অনুষ্ঠানে তাঁরও (রেহানার) থাকার কথা ছিল। এখানে আসার আগে আমি টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে কথা বলে এসেছি কারণ ও সবসময় আমার পাশে থাকুক সেটাই সবসময় চেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর এই প্রকাশনার কাজে সহায়তাকারি প্রায় সবাইকেই একে একে হারিয়ে ফেলেছেন বলে আক্ষেপ করে বলেন, ড.এনায়েতুর রহিম সাহেব জর্জটর ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ছিলেন, মূল কাজটি প্রথমে তাঁকে নিয়ে শুরু করি। তিনি মারা গেলেন। এরপর তত্বাবধায়ক সরকারের সময় ্েরগ্রফতার হয়ে জেলে থাকার সময় শুনতে পেলেন আরেক গবেষক ও অনুবাদকের দায়িত্ব নেয়া প্রফেসর শামসুল হুদা হারুন, একে একে তাঁ ঘনিষ্ট সহযোগী ও বান্ধবী বেবী মওদুদ এবং মাহবুবুল হক শাকিল চলে গেলেন। শুধু শামসুজ্জামান সাহেব, শামসুজ্জামান ভাই শুরু থেকেই আমাদের সঙ্গে আছেন- সেই ২০০৪ সাল থেকে। তিনি সবসময় সাহায্য করেছেন। উপদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে মনে হয় যেন এভাবে সকলকে কেন হারাচ্ছি জানি না। যাহোক অবশেষে বইটা আমরা বের করতে পেরেছি। আর আপনাদের হাতে, জনগণের হাতে দিতে পেরেছি। জাতির পিতার সপরিবারে হত্যার পর ৬ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরলেও তাঁকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে ঢুকতে দেয়া হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরে যখন তিনি ঢোকেন তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর আমার কেবলই মনে হচ্ছিল মায়ের কাছে রাখা ঐ খামগুলো কিভাবে উদ্ধার করা যায়। তিনি বলেন, ঐ সময় বাড়ি থেকে বঙ্গবন্ধুর লেখা খাতা কয়টাই নিয়ে আসেন। আর কিছুই তিনি আনেন নি। তিনি বলেন,চারিদিকে রক্তের ছোপ, ছোট সেই অবস্থার মধ্যে আমাকে খুঁজে দেখতে হয়েছে। ধুলাবালি আর মাকড়সার জালের মধ্যদিয়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে একটি খাতা আছে ১৯৬৮ সালের। ঐটি ওনার শেষ লেখা। ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু কে গ্রেফতার করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী এবং তাঁরপর আগরতলা মামলা হয় এবং ৫ মাস পর মামলা শুরু হওয়ার পরে খাতাটা তাঁর হাতে দেয়া হয়েছিল। সেখানে খুব অল্পই লেখা থাকলেও ঐ লেখাটা নিয়ে এটি স্মৃতি রয়ে গেছে যে স্মৃতিটা আমি আজকে আপনাদের বলবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানুয়ারি মাসের পর থেকে জানতাম না উনি কোথায় আছেন, কিভাবে আছেন, বেঁছে আছেন কি না। কোন খবর আমরা জানতে পারি নি। যখন মামলা শুরু হলো সেই কোর্টও ছিল ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তখনই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম দেখা হলো। এরপর আমরা মাঝে মাঝে সাক্ষাৎকারের অনুমতি পেতাম। বঙ্গবন্ধুকে অফিসার্স মেসের একটি কক্ষের্ াখা হতো। সেটাকে এখন একটি মিউজিয়ামের মত করে রাখা হয়েছে। আমাদের সেনাকবাহিনী জায়গাটি মিউজিয়ামের মত করে রেখেছে। আপনারাও ইচ্ছে করলেই সেটা দেখতে যেতে পারেন। সেখানে খাটের পাশে দুটো চেয়ার ছিল। আমরা যথন যেতাম হঠাৎ দেখি বালিশের নিচে একটা খাতা। আমার কি মনে হলো আমি আস্তে খাতাটা বের করে পড়তে শুরু করলাম। তখন আব্বা-আম্মা পাশাপাশি চেয়ারে বসে। আব্বা তখন বিষয়টি লক্ষ্য করলেন। উনি উঠে এলেন। আস্তে আমাকে জড়িয়ে ধরে কোন বকাও দিলেন না কিছুই বললেন না। শুধু হাত থেকে খাতাটা নিয়ে নিলেন। নিয়ে শুধু এইটুকুই বললেন-এখন পড়বি না। আমার মৃত্যুর পরে পড়বি। আমার হাত থেকে তিনি খাতাটা নিয়ে রেখে দিলেন। শেখ হাসিনা বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, ‘একটি মানুষ আজন্ম সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছেন। জীবনে টানা দুটি বছরও বাবাকে একটানা কাছে পাই নি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্টের পরে যখন ঐ খাতাগুলো হাতে পেলাম সত্যকথা বলতে কি এগুলো পড়া আামার জন্য খুব কষ্টের ছিলো। আমার বান্ধবী ছিলো বেবী। ও সবসময় পাশে থাকতো, সাহায্য করতো। কিন্তু খাতাগুলো আমি যে পড়বো, কেন যে সেই সাহসটাই পেতাম না। বার বার বাবার সেই কথাটাই মনে পড়তো। তাই এই বইটি যে আজকে মানুষের হাতে তুলে দিতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ফরিদপুর সফরে যাচ্ছেন। তিনি সেখানে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ।
ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি এবং বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসহ ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব মামুন-অর-রশীদ আজ এ সম্পর্কে বাসসকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুরে ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ১২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী পরে বিকেল ৩টায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় যোগদানের কথা রয়েছে। তিনি বিকেলে রাজধানীতে ফিরবেন।
প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হচ্ছে- ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, পল্লীকবি জসিম উদ্দীন সংগ্রহশালা, ফরিদপুর ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজী, শিশু একাডেমী, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয় নির্মাণ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ফরিদপুর, ফরিদপুর ৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের একাডেমিক কাম পরীক্ষা হল, সদর উপজেলাধীন চর কমলাপুর খেয়াঘাট থেকে বিলমামুদপুর স্কুল সড়কে কুমার নদীর ওপর ৯৬ মিটার আরসিসি ব্রিজ, ভাংগা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১-শয্যা থেকে ৫০-শয্যায় উন্নয়ন প্রকল্প, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ফরিদপুর, বিএসটিআই ভবন, ভাংগা থানা ভবন, মধুখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সদর উপজেলা থেকে বাখুন্ডা জিসি হয়ে রসুলপুর ভায়া চর নিখুরদি সড়ক বিসি দ্বারা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প, ফরিদপুর সদর উপজেলাধীন ডিক্রিরচর ইউনিয়নের মুন্সীডাঙ্গী কামিউনিটি ক্লিনিক এবং ৩৩/১১ কেভি হারুকান্দি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র (ক্ষমতা ২০/২৬.৬৬ এমভিএ)। এই ২০টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা।
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সেগুলো হচ্ছে- কুমার নদ পুনঃখনন প্রকল্প, আলফাডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রকল্প, ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় নির্মাণ প্রকল্প, পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প, পুলিশ অফিসার্স মেস, সালথা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, চন্দ্রপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ফরিদপুরের ছাত্রী নিবাস নির্মাণ, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্মাণ, ১৫০০-আসনবিশিষ্ট মাল্টিপারপাস হলরুম নির্মাণ, সালথা ফায়ার সর্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সদরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণ প্রকল্প। এই বারটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর