দুই জঙ্গির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে দেহ

দুই জঙ্গির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে দেহ

জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে কমান্ডো অভিযানে নিহত চারজনের মধ্যে নারীসহ দুই জঙ্গির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে মরদেহ দুটি গুলি ও বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে। তাদের শরীরের বেশির ভাগই ক্ষত-বিক্ষত।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মরদেহগুলো কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ।

গতকাল সোমবার এই দুই জঙ্গির মরদেহ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে মরদেহ দুটি ওসমানী হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়।

ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামসুল আলমের নেতৃত্বে চার সদস্যের চিকিৎসক দল ময়নাতদন্ত করে। প্রথমে পুরুষ জঙ্গির ময়নাতদন্ত করেন চিকিৎসকরা। পরে নারী জঙ্গির ময়নাতদন্ত শেষ হয় বেলা আড়াইটায়।

পুলিশ জানায়, মরদেহগুলো থেকে প্রস্রাব, মাথার চুল, নখ, যকৃত সংগ্রহ করা হয়েছে। জঙ্গিরা কোনো ধরনের উত্তেজক ট্যাবলেট খেয়েছিল কিনা এসব জানার জন্য সংগ্রহকৃত নমুনা ভিসেরা প্রতিবেদনের জন্য ঢাকায় পাঠাবেন চিকিৎসকরা। এর আগে সোমবার রাতে পুলিশ মরদেহ দুটির ডিএনএ সংগ্রহ করে।

কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহামদ জানান, মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। এখন এগুলো হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হবে। পরিচয় নিশ্চিত হলে সেগুলো হস্তান্তর করা হবে। তবে মরদেহ দুটি গুলি ও বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে। তাদের শরীরের বেশির ভাগই ক্ষত-বিক্ষত।

দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলের নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ইউনিট ও মহানগর পুলিশের একটি দল গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে জঙ্গিদের ফ্ল্যাটের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পুরো ভবনটি ঘিরে রাখে।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষ ইউনিট সোয়াটকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে।

ওদিন সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল। পরদিন ওই ভবনের ২৯টি পরিবারের ৭৮ জন বাসিন্দাকে জঙ্গিদের জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেন তারা।

২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অভিযান নিয়ে সেনবাহিনীর প্রেস ব্রিফিং শেষ দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন। আহত হন র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানসহ ৪৬ জন।

অভিযানের চতুর্থদিন গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনী জানায়, অভিযানে এ পর্যন্ত চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিন পুরুষ ও এক নারী। ভবনের ভেতরে আর কোনো জীবিত জঙ্গি নেই।

তবে পঞ্চম দিনের মতো ওই ভবনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিস্ফোরক অপসারণে অভিযান চালাচ্ছেন সেনা কমান্ডোরা।

জেলা সংবাদ