সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার মামলায় মৃত্যুান্ডাদেশপ্রাপ্ত হুজির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।
আবেদনটি সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর আগে দুপুর ১১টায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপন প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন।
জ্যেষ্ঠ কারা সুপার ছগির মিয়া বলেন, উচ্চ আদালতে রিপনের রিভিউ খারিজ হওয়ার পর মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানোর সাতদিনের মধ্যে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে হয়।
সাতদিন পূর্ণ হওয়ার একদিন আগে আজ সোমবার দেলোয়ার আবেদন করেন। তার আবেদনটি বিধি অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে।
কারাসূত্র জানায়, প্রাণভিক্ষার আবেদনে দেলোয়ার নিজেকে জঙ্গি বলে অস্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয় বলেও দাবি করেছেন। গত বুধবার দেলোয়ারকে রিভিউয়ের রায় ও মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছিল।
রিভিউ খারিজ হওয়ার পর এর আগে হুজির শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ দুজন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার কথা জানান।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার হিসেবে আনোয়ার চৌধুরী বাংলাদেশে দায়িত্ব নেয়ার পর ২০০২ সালের ২১ মে নিজের জন্মস্থান সিলেটে আসেন।
সফরকালে তিনি শুক্রবার হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে জুমার নামাজ ও মাজার জিয়ারত করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেনেড হামলার শিকার হন। হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ ৭০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুল, দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও শায়খ আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সিলেটের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতের দেয়া রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আসামিদের আপিল আবেদন গতবছরের ৭ ডিসেম্বর খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। ১৯ মার্চ ওই আবেদন খারিজ হয়। ২১ মার্চ রিভিউ খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।