রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনায় প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগ তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুব-উল আলম হানিফ।
তিনি আরো বলেন, ‘ওই ঘটনায় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কাজ চলছে। আশা করি, তদন্তে প্রকৃত ও সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে। ওই ৭০ লাখ টাকা কার টাকা, টাকার উৎস কি বা কোথা থেকে আসলো, কোথায় যাচ্ছিলো, তদন্তের মাধ্যমেই সব জানা যাবে। তাই তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত কোনো কথা বলা বা মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে দলের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রীর পিএসকে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করায় তদন্ত ততোটুকু সঠিক ও সুষ্ঠু হবে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরাও সঠিক ও সুষ্ঠু তদন্ত চাই। প্রকৃত তথ্য ও সত্য জানতে চাই।’
হানিফ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আসার পরে যদি সেটা সঠিক মনে না হয়, অসম্পূর্ণ মনে হয় বা কোনো প্রশ্ন ওঠে তাহলে প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের মাধ্যমে সঠিক তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা করবে।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে হানিফ বলেন, ‘আমরা একদিন আগেই পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। এটি দুঃখজনক।’
একটি মানুষ যিনি সারা জীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন, তার মতো এতো বিদগ্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে, এটা ভাবা যায় না বলে মন্তব্য করে হানিফ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগে তাকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা বা লেখালেখি দুঃখজনক। আগে তদন্ত প্রতিবেদন আসুক। তারপর কথা বলা বা মন্তব্য করা যাবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে হানিফ আরো বলেন, তদন্ত রিপোর্ট আসার আগেই যেভাবে নেতিবাচক লেখালেখি হচ্ছে, তাও দুঃখজনক। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এ ঘটনায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা এ নিয়ে নেতিবাচক কিছু না লেখেন তবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।’
হানিফ বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন যদি সুষ্ঠু না হয়, যদি সঠিক না হয়, যদি অসম্পূর্ণ মনে হয় তাহলে নেতিবাচক লিখবেন। তখন প্রশ্ন করবেন।’
বিএনপির এ বিষয়ে জুডিশিয়াল তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রশাসনিক বিষয়ে জুডিশিয়াল তদন্ত কমিটি গঠনের কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া দুদক তো বলেছে, তারাও তদন্ত করবে।
এ ঘটনায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগ করা উচিৎ ছিল কি না, জানতে চাইলে হানিফ বলেন, উন্নত দেশে এ ধরনের পদত্যাগের অনেক দৃষ্টান্ত হয়েছে। সেসব দেশে এ সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। আর আমাদের দেশে কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে তাকে নিয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।