উত্তর কোরিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ পিয়ং ইয়ংয়ের হ্যাকাররা হাতিয়ে নিয়েছিল বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)।
এ ধরনের অভিযোগের পর উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হতে পারে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল প্রসিকিউটররা। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় ব্যাংক লুটের ঘটনা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি।
যদি এই মামলা দায়ের করা হয় তবে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রসিকিউটরদের ধারণা চীনের এক দালাল বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা করেছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হ্যাকাররা ফেডারেল ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির চেষ্টা করলেও ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার লুট করতে সক্ষম হয় তারা। পরে কিছু অর্থ উদ্ধারও হয়েছে।
অর্থ লুটের ওই ঘটনার পর বেশ কিছু নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান উত্তর কোরিয়ার দিকে আঙ্গুল তোলে। তবে অনেক গবেষক এই অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার মার্কিন এই গোয়েন্দা সংস্থার উপ পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের হ্যাকিংয়ের জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেন। তবে এই ঘটনা প্রমাণ হলে উত্তর কোরিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে নয় বরং দেশটির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ লুটের ওই ঘটনায় সাইবার চোরেরা সুইফট ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোড ব্যবহার করেছিল। তারা নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের চারটি ফিলিপিনো অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি করতে সক্ষম হয়।
অ্যাসপেন ইনস্টিটিউটের এক গোল টেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডেপুটি ডিরেক্টর রিচার্ড লিজেট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকের সঙ্গে ২০১৪ সালে সনি পিকচার্স হ্যাকের যোগসূত্র রয়েছে বলে বেসরকারি খাতের গবেষকরা তথ্য পেয়েছেন। এসব ঘটনার পরেই উত্তর কোরিয়ার দিকে অভিযোগ তুলেছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
২০১৪ সালের সনি পিকচার্স হ্যাক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ লুটের ঘটনার মধ্যে সংযোগের কথা উল্লেখ করে লিজেট জানিয়েছেন, তিনি সত্যের প্রতি আশাবাদী।
লিজেট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সনি পিকচার্সে সাইবার হামলার যদি যোগসূত্র থাকে; তাহলে এর অর্থ হচ্ছে একটি রাষ্ট্র ব্যাংক ডাকাতি করছে। এটি একটি অনেক বড় বিষয়। এটি ব্যতিক্রম একটি ঘটনা।